মাধ্যমিকের পরেই যদি কেউ পেশাভিত্তিক পড়াশোনায় যেতে চায় তবে সে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংকে বেছে নিতেই পারে যদিও বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রী উচ্চমাধ্যমিকের পরেই পলিটেকনিক দেয়।
তবে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার আগে বেশ কিছু কথা মাথায় রাখা দরকার যেগুলি সম্বন্ধে আগের নিবন্ধে লেখা হয়েছিল। তাই ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কি, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কেন পড়বেন ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা সম্পর্কিত সব তথ্য জানতে – নিবন্ধটি পড়ুন।
এই নিবন্ধে আমরা দেখে নেব পলিটেকনিক দিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিপ্লোমা করার জন্য কোন কোন শাখায় পড়াশোনা করা যায়।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল|ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল |West Bengal Government Polytechnic College list
- ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল|ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল |West Bengal Government Polytechnic College list
- পলিটেকনিক বা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এর বিভিন্ন শাখা|পলিটেকনিক কোর্স ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল
- ১) অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং (Diploma in Automobile Engineering)-
- ২) এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং (Diploma in Agricultural Engineering)-
- ৩) আর্কিটেকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং( Diploma in Architectural Engineering)-
- ৪) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং (Diploma in Civil Engineering)–
- ৫) কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (Diploma in Chemical Engineering)-
- ৬) কম্পিউটার সাইন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং – ও Computer Science & Technology- (Diploma in Computer Science Engineering)-
- ৭) প্রিন্টিং টেকনোলজি / (Diploma in Printing Technology )
- ৮) ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলি কমিউনিকেশন /ETE/ETC (Diploma in Electronics & Telecommunication)-
- পলিটেকনিক কলেজ ইন কলকাতা |পলিটেকনিক কলেজ লিস্ট –
পলিটেকনিক বা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এর বিভিন্ন শাখা|পলিটেকনিক কোর্স ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল
১) অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং (Diploma in Automobile Engineering)-
অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কি ?
ইঞ্জিনিয়ারিং এর এই স্ট্রীমে ২ চাকা গাড়ি, ৪ চাকা গাড়ি, ট্রাক, লরি, বাস প্রভৃতি বিভিন্ন যানবাহনের পার্টস বা যন্ত্রাংশ ডিজাইন করা, ডেভেলপিং ও ম্যানুফ্যাকচারিং করা অর্থাৎ বানানো, যন্ত্রাংশ গুলি টেস্টিং করা, রিপেয়ারিং করা, সার্ভিসিং করা প্রধান কাজ।
সহজ কথায় এই যে আমাদের চারপাশে আমরা এতো গাড়ি ও বিভিন্ন যানবাহন দেখতে পাচ্ছি তা বানাচ্ছে ও অ্যাসেম্বল করছে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়াররাই।
অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং আসলে মেকানিক্যাল , ইলেক্ট্রিক্যাল, ইলেক্ট্রনিক ও ও সেফটি ইঞ্জিনিয়ারিং এর সম্মিলিত রূপ।
কিভাবে পড়া যায় এই অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ?
পলিটেকনিক দিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে হলে JEXPO এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পাস্ করতে হবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা ?
ন্যূনতম মাধ্যমিক পাস্ হলেই চলবে।
এই অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ কাজের সুযোগ কেমন ?
অটোমোবাইল এ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য কাজের সুযোগ যে যে ক্ষেত্রে পাওয়া যাবে তা হল –
CAD (Computer Aided design), CAM (Automation), ভালো করে শিখে নিলে ডিজাইনিং এর ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ থাকবে,
এছাড়াও নিজের অটোমোবাইল মেইনটেন্যান্স ওয়ার্কশপ খুলে নিজের প্রতিষ্ঠান বানিয়ে ব্যবসা শুরু যথেষ্ট ভালো উদ্যোগ হতে পারে আর বিভিন্ন অটোমোবাইল বা গাড়ি ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিতে চাকরিও করতে পারবে।
একজন অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার এর কর্মক্ষেত্র হতে পারে নিচের উদাহরনগুলি-
প্রোডাক্শন প্ল্যান্ট ,
অটোমোবাইল কোম্পানির সার্ভিস স্টেশন ,
মোটর ভেহিক্যাল ডিপার্টমেন্ট
কার ইন্স্যুরেন্স বিশেষজ্ঞ
ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি
স্টেট ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন
অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারদের কি কাজ করতে হয়/ জব রোল কি ?
অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার
অটোমোবাইল ডিজাইনার
কার ডিজাইনার
এক্সেকিউটিভ
Automotive Engineering Technician
যে গভর্নমেন্ট কলেজ গুলিতে এই অটোমোবাইল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয় তা হল । (পলিটেকনিক কলেজ ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল ফর অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং )
কোচবিহার পলিটেকনিক, কোচবিহার –
বেঙ্গল ইনস্টিটিউট টেকনোলজি , বর্ধমান –
মেমারি গভর্নমেন্ট পলিটেকনিক , বর্ধমান –
মালদা পলিটেকনিক, মালদা –
রানাঘাট গভর্নমেন্ট পলিটেকনিক, নদীয়া –
রায়গঞ্জ পলিটেকনিক,-
নলহাটি গভর্নমেন্ট পলিটেকনিক , বীরভূম –
(সমস্ত গভর্নমেন্ট পলিটেকনিক কলেজে কোর্স ফী প্রায় এক ই )
অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে কোন কোম্পানি তে চাকরি পাওয়া যায় ?
লারসেন টুব্র্য ( L & T )
অশোক লেইল্যান্ড
মারুতি সুজুকি
মাহিন্দ্রা & মাহিন্দ্রা
বাজাজ
টেলকো
Hyundai
টয়োটা
২) এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং (Diploma in Agricultural Engineering)-
এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং কি ?
ইঞ্জিনিয়ারিং এর এই শাখায় কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ডিজাইন করা ও তা বানানো , আধুনিক পদ্ধতিতে চাষবাসের জন্য জমি নির্বাচন পদ্ধতি ও তার নির্মাণ, জলনিকাশী ব্যবস্থা ( water drainage সিস্টেম ), সয়েল ম্যানেজমেন্ট , ভূমিক্ষয় রোধ করার উপায় ( erosoin control ), জল জমিতে জল সরবরাহ ব্যবস্থা ( water supply ), চাষের কাজের জন্য যে বৈদ্যুতিক ব্যবহার হয় তার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ, সেচকার্য পরিচালন পদ্ধতি (irrigation ) শেখানো হয়।
অর্থাৎ কৃষি ও প্রযুক্তির মেলবন্ধনে কৃষি পণ্যের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য যে যে প্রযুক্তির প্রয়োজন তা চাষবাসের কাজে ব্যবহারযোগ্য করে প্রয়োগ করাই এই পেশার ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ।
এগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে কাজের সুযোগ কেমন ?/কি কাজ করতে হয় / জব রোল কি ?
অ্যাগ্রোনোমিস্ট, এগ্রিকালচারাল মার্কেটিং অফিসার, এগ্রিকালচারাল ইন্সপেকক্টর, অফিসার, এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ার, হর্টিকালচারিস্ট, হিসেবে ও ফার্টিলাইজার ইন্ডাস্ট্রিতেও কাজের সুযোগ আছে।
এগ্রিকালচার এ ডিপ্লোমা করার পর কি করা যায় ?
পড়ুয়া চাইলে উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে পারে, অর্থাৎ এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ বিটেক করতে পারে, এছাড়া এগ্রিকালচারাল ইনফরমেশন টেকনোলজি তে বিটেক করতে পারে বা এগ্রিকালচার এ বিএসসি ও করতে পারা যাবে।
এছাড়াও উপরে কাজের সুযোগে উল্লিখিত বিভিন্ন পোস্টে সরকারি ও বেসরকারি চাকরিও পাওয়া যাবে।
কোন কোন গভর্নমেন্ট কলেজে এগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয় ?
শুধুমাত্র মুর্শিদাবাদ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি , মুর্শিদাবাদ
আসন সংখ্যা – ৬০ টি
খরচ – ৩ বছরে সর্বমোট প্রায় ৪ হাজার টাকা।
শিক্ষাগত যোগ্যতা ?
ন্যূনতম মাধ্যমিক পাস্ হলেই চলবে।
কিভাবে পড়া যায় এই ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ?
JEXPO এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পাস্ করতে হবে।
৩) আর্কিটেকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং( Diploma in Architectural Engineering)–
আর্কিটেকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং কি ?
ইঞ্জিনিয়ারিং এর এই শাখাতে বিভিন্ন দৃষ্টি নান্দনিক স্থাপত্যের নির্মাণ কাজ শেখানো হয়। আমরা যে হেরিটেজ বিল্ডিং, বড়ো হোটেল, ব্রীজ , বড়ো মূর্তি , রাজকীয় বাংলো , রাজবাড়ী দেখি তা বানানোর কাজে যেমন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার লাগে ঠিক তেমনই তাকে আকর্ষণীয় দেখতে করে তোলার কাজ আর্কিটেকচারাল ইঞ্জিনিয়ারদের।
এই ইঞ্জিনিয়ারিং এ কাজের সুযোগ কেমন ?
যদিও আর্কিটেকচারাল ইঞ্জিনিয়ার বলতেই বেশির ভাগ লোকের মনে হয় যে কাজের সুযোগ কম কারণ মেগা প্রজেক্টস না হলে আর্কিটেকচার এর ইঞ্জিনিয়ারদের কি কাজ ? কিন্তু আর্কিটেকচার এখনো অবধি যে খুব বেশি কলেজে পড়ানো হয় তা নয় , তাই এখনো অবধি বাজারে চাহিদা যথেষ্ট ভালো আর শুধু মাত্র মেগা প্রজেক্টস এই যে আর্কিটেক্টদের কাজ আছে তা একেবারেই নয়,
সমস্ত উন্নয়নশীল দেশে লাক্সারি হোটেল/ স্থাপত্যের/ রেসিডেন্সিয়াল বিল্ডিং এর কোনো অভাব দেখতে পাওয়া যায় না , তাই কাজের বাজার ও ভালো , এছাড়াও বিভিন্ন ইন্টেরিয়র ডিজানিং ফার্ম গুলিও ডিপ্লোমা আরকিটেক্ট ভালো নিয়োগ করে কারণ IIT এর আর্কিটেক্ট নিয়োগ করার ক্ষমতা তাদের নেই।
কি কাজ করতে হয়/ জব রোল কি ?
নির্মাণ কার্যে সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করা। সেটা ডিজাইনের মাধ্যমেও হতে পারে বা আসল ফিল্ড এক্সিকিউশন এর মাধ্যমেও হতে পারে।
কোন কোন গভর্নমেন্ট কলেজে আর্কিটেকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয় ?
উইমেন পলিটেকনিক , কলকাতা
আসন সংখ্যা – ৬০ টি
শিলিগুড়ি গভর্নমেন্ট পলিটেকনিক, শিলিগুড়ি –
খরচ – ৩ বছরে সর্বমোট প্রায় ৩ হাজার টাকা। আসন সংখ্যা – ৬০ টি
নর্থ ক্যালকাটা পলিটেকনিক , কলকাতা
খরচ – ৩ বছরে সর্বমোট প্রায় ৩ হাজার টাকা। আসন সংখ্যা – ৬০ টি
উইমেন পলিটেকনিক, চন্দন নগর –
আসন সংখ্যা – ৬০ টি
শিক্ষাগত যোগ্যতা ?
ন্যূনতম মাধ্যমিক পাস্ হলেই চলবে।
কিভাবে পড়া যায় এই ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ?
JEXPO পরীক্ষায় পাস্ করে।
৪) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং (Diploma in Civil Engineering)-–
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কি ?
ঘর-বাড়ি, ব্রীজ, রাস্তা, সহ আমাদের আশেপাশে যা যা বানানো হচ্ছে এমন জিনিস আমরা দেখতে পাই প্রথমে ডিজাইন করতে হয় তারপর বানাতে হয়। এই ডিসাইন করা থেকে বানানো সমস্ত কাজ করে সিভিল ইঞ্জিনিয়াররা।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ কাজের সুযোগ কেমন ?
তোমাদের আশেপাশে যা যা জিনিস নির্মীয়মান দেখছো সব কাজে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার লাগে তাই কাজের বাজার ও ভালো , কিন্তু যে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ করতে হয়, তা যথেষ্ট কষ্ট সাপেক্ষ।
ঝড়-জল-রোদ, গরম সমস্ত কিছুতে দাঁড়িয়ে কাজ করা সবার শরীরের জন্য সম্ভব নয়। যদি কেউ লালু ভুলু হয় তাহলে তার এই স্ট্রিম না বাছাই ভালো।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের কি কাজ করতে হয়/ জব রোল কি ?
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পরে যে শুধু মাত্র মাঠে-ঘাটে, জলে-জঙ্গলে কাজ করতে হয় এরকম একদমই নয়, ডিজাইনিং এর কাজের পারিশ্রমিকও যথেষ্ট ভালো।
তাই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিপ্লোমা করার সময় যদি কম্পিউটার থাকে তাহলে ডিজাইনিং সফটওয়্যার ও শিখে নিতে হবে পেশাদারি স্তরে। তাহলেই সত্যি রোজগারের সুযোগ ভালো।
কোন কোন গভর্নমেন্ট কলেজে পড়ানো হয় ?
পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৫০ টি গভর্নমেন্ট কলেজে পড়ানো হয় এই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।
শিক্ষাগত যোগ্যতা ?
ন্যূনতম মাধ্যমিক পাস্ হলেই চলবে।
কিভাবে পড়া যায় এই ডিপ্লোমা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ?
JEXPO পরীক্ষায় পাস্ করে।
৫) কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (Diploma in Chemical Engineering)-
কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কি ?
কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এমন একটি শাখা যেখানে বিভিন্ন মেটেরিয়ালকে ডিস্টিলেশন অবসর্প্শন , এভাপোরেশন , ক্রিস্টালাইসেশন, পদ্ধতিতে পরিবর্তিত করে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় দ্রব্য বা প্রোডাক্ট বানানো হয়।
এটি তিনটি ধাপে করা করা হয়। এক – র (Raw) মেটেরিয়াল কে ট্রিটমেন্ট করে , প্রপার কেমিক্যাল ট্রান্সফরমেশন করে এবং আমাদের চাহিদা অনুযায়ী কেমিক্যাল পৃথক করা।
এই শাখা মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় সমস্ত জিনিস বানানোর প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাপালন করে যেমন খাবার, পোশাক, বাড়ি-ঘর, স্বাস্থ্য, Consumption, কমিউনিকেশন , Application of Natural Sources, Protection of Environment সহ সমত ক্ষেত্রে কেমিক্যালের প্রয়োজন পড়ে আর এই ইঞ্জিনিয়ারিং শাখা এই কেমিক্যাল তৈরির জন্যই সার্বিকভাবে প্রয়োজনীয়।
এই ইঞ্জিনিয়ারিং এ কাজের সুযোগ কেমন ? /Can chemical engineers get good jobs in india?
অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারিং শাখাগুলির তুলনায় কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং যথেষ্ট কম সংখ্যক ছেলেমেয়েরাই পড়ে ও হাতে গোনা কয়েকটি কলেজেই এই বিষয়ে পড়ানো হয়। এই বিষয়ের ইঞ্জিনিয়াররা সাইট/ফিল্ড ও অফিস জব দুই-ই করতে পারে।
ফিল্ড জব এর ক্ষেত্রে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্ল্যান্ট, রিফাইনারি, থার্মাল প্ল্যান্টস এ কাজ করা যায়। যেকোনো জিনিসের প্রোডাক্শন করে তার টেস্টিং এ কেমিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং কাজে লাগে।
কি কি মেটেরিয়াল কোন অনুপাতে ব্যবহার করে জিনিসটি বানানো হল ও তার গুণগত মান বা কোয়ালিটি ঠিক থাকলো কিনা সমস্ত বিষয় চেক করাই কাজ কেমিকাল ইঞ্জিনিয়ার দের।
কোন কোন ইন্ডাস্ট্রিতে এই সিভিল ইঞ্জিনিয়াররা কাজ করতে পারে ?
ফুড ইন্ডাস্ট্রি
ওয়াইন বানানো
মাইনিং অ্যান্ড মেটাল ইন্ডাস্ট্রি
অয়েল অ্যান্ড পেট্রো কেমিক্যাল
ইলেক্ট্রনিক
মেডিকেল অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল
কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি
কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের কি কি কাজ করতে হয়?
ফার্টিলাইজার তৈরির পদ্ধতি বানানো।
জামা কাপড়ের বানানোর যে সিনথেটিক মেটেরিয়াল তৈরী হয় তা বানানো ও তার গুণগত মান আরও উন্নত করা।
ফুড প্রসেসিং উন্নত করা।
ইলেক্ট্রনিক চিপ বা মাইক্রো চিপ বানানো ও ডিসাইন করা।
কেমিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট এর বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ডিসাইন করা ও তার প্রসেসিং এর নজরদারি করা।
ওয়াটার ট্রিটমেন্ট ও ডিসপোজাল ক্ষেত্রে কাজ করা করা।
কোন কোন গভর্নমেন্ট কলেজে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয় ?
হুগলী ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি –
কন্টাই পলিটেকনিক, পূর্ব মেদিনীপুর –
আসন সংখ্যা – ৬০, খরচ – অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নেই।
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট – https://www.contaipolytechnic.com/academics/departments/department-of-chemical-engineering/
ডাঃ মেঘনাদ সাহা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি , হলদিয়া
আসন সংখ্যা – ৬০, খরচ – অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নেই।
এখানে পোস্ট ডিপ্লোমা কোর্স হিসেবে Petrochemical Engineering এর ১.৫ বছরের কোর্স করানো ও হয়। আসন সংখ্যা -১৫
উলুবেড়িয়া গভর্নমেন্ট পলিটেকনিক
আসন সংখ্যা – ৬০, খরচ – অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নেই।
খরচ অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে দেওয়া না থাকলেও গভর্নমেন্ট কলেজে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে সমস্ত কোর্সেই খরচ নাম মাত্র , তাই পড়তে ইচ্ছুক হলে কলেজের অফিসিয়াল ফোন নং এ যোগাযোগ করে খরচ কেমন জেনে নাও।
কিভাবে পড়া যায়?
JEXPO এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পাস্ করতে হবে।
৬) কম্পিউটার সাইন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং – ও Computer Science & Technology- (Diploma in Computer Science Engineering)-
কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং কি ?
এই শাখায় কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ , প্রোগ্রাম ডিজাইন, কম্পিউটেশন, হার্ডওয়্যার – সফটওয়্যার এর সম্মিলিত প্রয়াসে কম্পিউটার কে পারফর্ম করানোই শেখানো হয়।
এই কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং এ কাজের সুযোগ কেমন ?
কেউ যদি ভাবে এই ইঞ্জিনিয়ারিং শাখায় ডিপ্লোমা করে সে মস্ত বড়ো আইটি প্রফেশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিতে খুব ভালো চাকরি পাবে তা কিন্তু নয়।
বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক কোম্পানি যারা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বা আইটি প্রফেশনালদের লক্ষ লক্ষ টাকা দেয় বলে লোকসমাজে প্রচলিত সেইসব কোম্পানিতে কিন্তু ডিপ্লোমা কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করার সুযোগ খুব ই কম। তাই এই সব কোম্পানিতে চাকরি করা মূল উদ্দেশ্য হলে অবশ্যই উচ্চশিক্ষা অর্থাৎ বিটেক করতে হবে।
কিন্তু যদি কেউ কম্পিউটার ভালো বেস থাকে ও তার এই কনফিডেন্স থাকে যে সে নিজের কাজের সুযোগ নিজে বানিয়ে নেবে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করে ( শুধু ডিপ্লোমা কোর্সের পড়াশোনায় তা হবেনা , ডিপ্লোমার সাথে প্রোগ্রামিং শিখে যা বাড়িতে থেকেই এখন শেখা সম্ভব ও সত্যি ই কম্পিউটার কে নখদর্পনে করতে পারলে ) সে এই স্ট্রিমে পড়াশোনা করতেই পারে।
কিভাবে পড়া যায়?
JEXPO এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পাস্ করতে হবে।
এই পেশার ইঞ্জিনিয়াররা যে যে ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ পেতে পারে তা হল-
প্রোগ্রামার
সিস্টেম অ্যানালিস্ট
টেকনিক্যাল রাইটার
অপারেশন এক্সেকিউটিভ
টেকনিশিয়ান
আইটি সাপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার
নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার
ডেটাবেস অ্যাডমিনিস্ট্রেটর
সফটওয়্যার ডেভেলপার
কোন কোন গভর্নমেন্ট কলেজে কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিপ্লোমা পড়ানো হয় ?
পশ্চিমবঙ্গের অনেক কলেজে ( প্রায় ১৮ টি কলেজে ) পড়ানো হয়।
Computer Software Technology – Sheikhpara Abdur Rahaman Memorial Polytechnic College, মুর্শিদাবাদ
আসন -৩০ টি , খরচ- ১৮০০ টাকা
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট –
https://polytechnic.wbtetsd.gov.in/polytechnic/academics/programs/sheikhparaarmpoly
৭) প্রিন্টিং টেকনোলজি / (Diploma in Printing Technology )
প্রিন্টিং টেকনোলজি /প্রিন্টিং ইঞ্জিনিয়ারিং কি ?
ইঞ্জিনিয়ারিং এর এই শাখা তে বিভিন্ন ধরণের প্রিন্টিং প্রেসে যে ধরণের কাজ কর্ম হয়, যে যে মেশিনারি ও পদ্ধতি গুলি ব্যবহৃত হয় তা শেখানো হয়।
এই প্রিন্টিং টেকনোলজি /প্রিন্টিং ইঞ্জিনিয়ারিং এ কাজের সুযোগ কেমন ?
একটি মাত্র কলেজে এই শাখার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয় তাই বুঝতেই পারছো প্রতিযোগিতা খুব কম থাকার জন্য কাজের সুযোগ পাওয়ার বাজার ও যথেষ্ট ভালো।
সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যেমন টাঁকশাল , ছাপাখানায়, টেক্সটাইলে কোম্পানিতে চাকরির যথেষ্ট ভালো সুযোগ থাকে , যারা পড়ে একটু খোঁজ নিয়ে দেখতে পারো প্রায় বেশিরভাগই ভালো চাকরি করে।
কোন কোন গভর্নমেন্ট কলেজে প্রিন্টিং টেকনোলজি /প্রিন্টিং পড়ানো হয় ?
রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ প্রিন্টিং টেকনোলজি , কলকাতা Regional Institute of Printing Technology, Kolkata
কিভাবে পড়া যায়?
JEXPO এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পাস্ করতে হবে।
৮) ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলি কমিউনিকেশন /ETE/ETC (Diploma in Electronics & Telecommunication)-
ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং কি ?
ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকম্যুনিকেশন হল ইঞ্জিনিয়ারিং এর আধুনিক একটি শাখা যেখানে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক দ্রব্যাদির ডিজাইন , ম্যানুফ্যাচারিং, ফ্যাব্রিকেশন, টেস্টিং ও সুপারভাইস করা শেখানো হয়।
আমরা যেসব জিনিসপত্র রোজ ব্যবহার করি, যেমন মোবাইল, টিভি,ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক, কম্পিউটার প্রভৃতি জিনিসপত্রাদি, সেগুলোই বানাতে শেখায় ও তার মেইনটেন্যান্স শেখায় এই শাখা।
ETE ইঞ্জিনিয়ার রা কাজ করে অ্যানালগ ট্রান্সমিশন, ডিজিটাল ট্রান্সমিশন, অডিও ও ডাটা, মাইক্রোপ্রসেসর, অ্যানালগ কমিউনিকেশন, ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট ওয়েভ প্রোগ্রেশন , স্যাটেলাইট কমুনিকেশন প্রভৃতি প্রযুক্তি ক্ষেত্রে।
কিভাবে পড়া যায় ?
JEXPO এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পাস্ করতে হবে।
ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলি কমিউনিকেশন পড়ে কাজের সুযোগ যে যে ক্ষেত্রে পাওয়া যায় তা হল –
হেলথ কেয়ার, পার্সোনাল টেকনোলজি, ম্যানুফ্যাকচারিং, টিভি, রেডিও, টেলিকমিউনিকেশন প্রভৃতি ফিল্ড এ।
ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকম্যুনিকেশন এ পড়ুয়াদের বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি তৈরী করা, ডিজাইন করা শেখানো হয়।
কয়েকটি ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতির উদাহরন হল – এসি, এয়ার পিউরিফায়ার, প্রিন্টার,ব্যাঙ্ক নোট গোনার মেশিনফোন, ল্যাপটপ ,ইলেকট্রনিক এনালাইসের, ক্যালকুলেটর, ওটিজি, অ্যালার্ম ক্লক , ওয়েট মেশিন সহ আমরা প্রায় যেসব জিনিস বা গ্যাজেট ব্যবহার করে থাকি তাই ইলেক্ট্রনিকস এর মধ্যেই পড়ে।
ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকম্যুনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং এ কাজের সুযোগ কেমন?
বর্তমানে আমরা প্রায় চতুর্দিকে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেট দ্বারা বেষ্টিত। প্রায় সমস্ত যন্ত্রপাতি; প্রেসার মাপার মেশিন থেকে ইসিজি মেশিন, মোবাইল থেকে এয়ারপোর্টের বড়ো বড়ো সার্ভিলেন্স মেশিন সব ই ইলেকট্রনিক্স মেশিন। তাই এই স্ট্রীমে ডিপ্লোমা পড়ে কাজের সুযোগ ভালোই।
ইলেক্ট্রনিক্স সার্কিট ডিসাইন, হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, পাওয়ার ইলেক্ট্রনিক্স, মোবাইল কোম্পানি, ডিজিটাল সিস্টেম ,ওয়ারলেস কমিউনিকেশন প্রভৃতি ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ আছে।
যে যে কোম্পানি গুলি তে এই ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগ করার সুযোগ বেশি থাকে তা হল–
উইপ্রো, ইন্টেল, cisco , TISCO , TCS JINDAL STEEL ,LSI LOGIC ,
যে গভর্নমেন্ট প্রতিষ্ঠানে এই স্ট্রিমের চাকরি দেখা যায় তা হলো –
রেল, BSNL MTNL NTPC NTRO SAIL, DMRC ইত্যাদি।
পড়াশোনা চলাকালীন বা ডিপ্লোমা সম্পূর্ণ হলে যে কোর্স গুলি করে নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে কর্মজগৎের কাছে নিজের ভ্যালু বাড়াতে পারবে তা হল-
এম্বেডেড সিস্টেম , VLSI , রোবোটিক্স , SCADA , PLC, সার্কিট ডিজাইন , ও ফাইবার অপটিক টেকনোলজি।
ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন কি কাজ করতে হয়/ জব রোল কি ?
অ্যাসিস্টেন্ট ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার, ব্রডকাস্ট টেকনিশিয়ান, সার্কিট ডিজাইন টেকনিশিয়ান, অ্যারোস্পেস টেকনিশিয়ান
কোন কোন গভর্নমেন্ট কলেজে ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলি কমিউনিকেশন পড়ানো হয় ?
পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ১৬ টি গভর্নমেন্ট কলেজে এই ইলেক্ট্রনিক্স এন্ড টেলি কামিউনিকেশন বিষয়ে ডিপ্লোমা পড়ানো হয়।
আশা করি এই নিবন্ধটি পড়ে এখানে উল্লিখিত প্রতিটি ইঞ্জিনিয়ারিং স্ট্রীম সম্বন্ধে কিছুটা সম্যক ধারণা তৈরী হবে ও সেই অনুযায়ী নিজের ভালোলাগা পছন্দ মত স্ট্রিম স্ট্রীম বাছতে সক্ষম হবে।
আর যারা কলকাতার মধ্যে ডিপ্লোমা পড়তে চাও তাহলে তলার লিংকে ক্লিক করে দেখো কলকাতার কি কি গভর্নমেন্ট আছে।
পলিটেকনিক কলেজ ইন কলকাতা |পলিটেকনিক কলেজ লিস্ট –
https://voclet.webscte.co.in/list-Polytechnic
https://www.wbtetsd.gov.in/technical_education_and_training/institutes
স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড কি ? সমস্ত খুঁটিনাটি
সরকারি চাকরির পরীক্ষার জন্য জেনারেল স্টাডিস এর আবশ্যিক বইগুলি
পশ্চিমবঙ্গে ডিসট্যান্স এডুকেশনের মাধ্যমে কোথায় কোথায় গ্র্যাজুয়েশন ও মাস্টার্স করা যায়