Rich Dad Poor Dad Summary In Bengali | রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড বাংলা সারাংশ

by

Rich Dad Poor Dad বইটির লেখক Robert Kiyosaki এই বইয়ে তার নিজের পিতাকে Poor Dad এবং তার বন্ধুর পিতাকে Rich Dad বলে উল্লেখ করেছেন।

তার নিজের পিতা অর্থাৎ Poor Dad প্রথাগত শিক্ষা অনুযায়ী অত্যন্ত শিক্ষিত ছিলেন কিন্তু অর্থ সম্বন্ধীয় জ্ঞান তার ছিল না, অপরদিকে তার বন্ধুর পিতা অর্থাৎ Rich Dad প্রথাগত শিক্ষা অনুযায়ী উচ্চশিক্ষিত না হলেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত ধনী।

এই দুইজনই নিজের নিজের ব্যক্তিগত জীবনে সফল হলেও তাদের মানসিকতা এবং টাকা বা অর্থের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন, তারা দুজনেই ছোটবেলা থেকে লেখককে যা যা উপদেশ দিতেন তা ছিল সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী।

যেখানে তার পিতা কোনো ক্ষেত্রে বলতেন “আমার এটা পাওয়ার সামর্থ্য নেই” অপরদিকে ওই একই পরিস্থিতিতে Rich dad বলতেন “আমি এটা কিভাবে পেতে পারি ?”

লেখকের পিতা অর্থাৎ Poor Dad  খাবার টেবিলে টাকাপয়সার আলোচনা পছন্দ করতেন না আর Rich Dad খাবার টেবিলে বসেও ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করতেন।

Poor Dad মনে করতেন টাকাই সব সমস্যার মূল কারণ অপরদিকে Rich Dad মনে করতেন টাকা না থাকাই সব সমস্যার মূল কারণ।

Poor Dad বলতেন খুব ভালো করে পড়াশোনা করো যাতে একটা বড়ো নামীদামী কোম্পানিতে কাজ করতে পারো আর Rich Dad বলতেন খুব ভালো করে পড়াশোনা করো যাতে একটা বড়ো নামীদামী কোম্পানিকে কিনে ফেলতে পারো।

লেখক বলেছেন যদি তিনি শুধুমাত্র একজনের উপদেশই শুনতেন তাহলে হয়তো তিনি সেটাই মেনে চলতেন কিন্তু এই দুজনের বিপরীতধর্মী উপদেশ তার সামনে সুযোগ এনে দেয় এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার যে তিনি কোন উপদেশ নির্বাচন করবেন যেটা তিনি নিজের জীবনে মেনে চলবেন।

এর পর ন বছর বয়সে তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি তার বন্ধুর পিতা অর্থাৎ Rich Dad এর কথাই মেনে চলবেন এবং এরপর একটানা ৩০ বছর তিনি তার Rich Dad এর উপদেশ গ্রহণ করতে থাকেন এবং ৩৯ বছর বয়সে এসে তার Rich Dad ও বুঝতে পারেন যে তাকে আর উপদেশ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। 

তিনি তার এই প্রাপ্ত জ্ঞান মাত্র ছটি ভাগে ভাগ করে এই বইয়ে তুলে ধরেছেন যা আমি নিজের ভাষায় খুব সংক্ষেপে লিখলাম 

Rich Dad Poor Dad Bengali Summary

১. The Rich Don’t Work For Money –  নিম্ন এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণী টাকার জন্য কাজ করে কিন্তু ধনীরা তা করেনা , ধনীদের ক্ষেত্রে তাদের টাকা তাদের জন্য কাজ করে। 

২. Why Teach Financial Literacy  – আপনি কত টাকা আয় করছেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয় আপনি আয়ের কতটা রাখতে পারছেন সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

ধনীরা নিজেদের assets এর পরিমাণ বাড়াতে থাকে কিন্তু নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী assets ভেবে নিজেদের liabilities বাড়াতে থাকে।

Assets ও liabilities এর তফাৎ বোঝা খুব জরুরি, লেখক খুব সহজভাবে বলেছেন যে যা কিছু আপনার পকেটে টাকা ভরায় তাই হলো assets এবং যা কিছু আপনার পকেট থেকে টাকা বের করে তা হলো liabilities.

লেখকের মতে একজন উচ্চশিক্ষিত এবং পেশাগত দিক থেকে অত্যন্ত সফল ব্যক্তিও কিন্তু আর্থিক জ্ঞানের বিষয়ে সম্পূর্ণ অজ্ঞ হতে পারে।

৩. Mind Your Own Business – ধনীরা ক্রমাগত নিজেদের assets এর পরিমাণ বাড়াতে থাকে এবং সেদিকেই তাদের লক্ষ্য থাকে, বাদবাকি সবাই শুধুমাত্র নিজেদের রোজগার নিয়েই মাথা ঘামায়।

আপনি যদি সারাজীবন অন্য কারোর জন্যই কাজ করতে থাকেন তাহলে আর্থিক স্বাধীনতা পাওয়া অত্যন্ত দুরূহ।

আপনি যদি চাকরিও করেন তাহলেও সেটার সাথে সাথেই চেষ্টা করতে থাকুন নিজের assets এর পরিমাণ বাড়ানোর।

৪. The History Of  Taxes And The Power Of Corporations –  ধনী হতে গেলে tax management এর বিষয়ে উপযুক্ত ও স্বচ্ছ ধারণা থাকা একান্ত জরুরি।

আপনার assets এ থাকা প্রতিটি বস্তু আপনাকে প্রতিনিয়ত আরো ধনী হতে সাহায্য করবে।

৫. The Rich Invent Money – বাস্তব পৃথিবীতে এগিয়ে যেতে হলে শুধু স্মার্ট হওয়াই যথেষ্ট নয় সাহসী হওয়াও দরকার।

আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান ও শক্তিশালী asset হলো আমাদের মন, একে যদি আপনি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেন তাহলে অসীম সম্পদের অধিকারী হতে পারবেন।

আপনি আপনার মস্তিষ্ককে কাজে লাগিয়ে এমন অনেক সুযোগ খুঁজে পাবেন যা খালি চোখে ধরা পড়ে না।

৬. Work To Learn – Don’t Work For Money –  লেখকের পিতার কাছে চাকরির নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তাই ছিল সবকিছু কিন্তু Rich Dad এর কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল শিখতে থাকা।

লেখক এই বইয়ে একটি পুরোনো উদ্ধৃতি তুলে বলেছেন ‘Job’ শব্দটির পুরো অর্থ হলো ‘Just Over Broke’.

একজন ধনী ও একজন দরিদ্র ব্যক্তির মধ্যে মূল ফারাক গড়ে তোলে তাদের মানসিকতা, অর্থ নয়।

ব্যর্থতা যাদের আরো উদ্যমী করে তোলে তারাই ধনী হতে পারে আর যারা ব্যর্থতার ভয়ে ধনী হওয়ার ইচ্ছেকেই হারিয়ে ফেলে তারা কখনই আর্থিক স্বাধীনতা অর্জন করতে পারে না।

এই বইয়ের শেষ ভাগে লেখক Cashflow Quadrant এর কথা বলেছেন যেটা আপনি নিচের ছবি থেকে বুঝতে পারবেন।

জীবনে আর্থিক স্বাধীনতা লাভের জন্য আপনার এটা বোঝা খুব দরকার যে এই মুহূর্তে আপনি Quadrant এর কোন অংশে আছেন এবং আপনার লক্ষ্যপূরণের জন্য আপনার কোন অংশে থাকা দরকার।

cashflow quadrant esbi
Image Source – Richdad.com

এই ছবির প্রতিটি Quadrant এ থাকা মানুষদের মানসিকতা ও অর্থ সম্বন্ধে ধারণা ও দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা আলাদা , এবার এক এক করে সেগুলি দেখে নেওয়া যাক 

বামদিকের Quadrant এর ওপরে আছে  E  

E  অর্থাৎ Employee বা চাকুরীজীবি 

প্রত্যেক চাকুরীজীবি তাদের জীবনে একটাই জিনিস খোঁজে – নিরাপত্তা, এরা ঝুঁকি নিতে একদমই পছন্দ করে না এবং শুধুমাত্র একটা নিশ্চিত ও নিরাপত্তাবেষ্টিত জীবন কাটানোর জন্য এরা অবসরকালীন সময় পর্যন্ত অন্যের হয়ে কাজ করেই কাটিয়ে দেয় এবং মাসের শেষে পাওয়া নির্দিষ্ট বেতনেই খুশি থাকে।

এদের ধ্যানধারণা হলো এই যে একদম ছোটো থেকে ভালো করে পড়াশোনা ও ভালো রেজাল্ট করার উদ্দেশ্যই হলো বিভিন্ন সুযোগসুবিধা সম্পন্ন মোটা মাইনের একটা চাকরি যোগাড় করা।

চাকুরীজীবীরা বেশি টাকা রোজগার করার জন্য একটা চাকরি ছেড়ে আরো বেশি মাইনের চাকরিই খোঁজে।

এই ক্ষেত্রে মাইনে বা বেতনের পরিমাণ Active Work এর ওপর নির্ভর করে, অর্থাৎ কোনো চাকুরীজীবি ঠিক ততটাই আয় করবে যতটা সময় সে কাজ করবে।

বেশিরভাগ চাকরির ক্ষেত্রেই ন্যূনতম কাজের সময় হলো আট ঘন্টা, এছাড়াও যাতায়াত বা অন্যান্য নানা কারণে প্রতিটি চাকরিজীবী প্রতিদিন তাদের জীবনের দশ ঘন্টা শুধুমাত্র সেই প্রতিষ্ঠানকে দেয় যেখানে সে কাজ করে।

বিনিময়ে পায় মাসের শেষে নির্দিষ্ট মাইনে ও নিরাপত্তা। 

সুতরাং আপনি যদি এই চিন্তাধারায় বিশ্বাসী হন তাহলে নিশ্চিতভাবে আপনি এই Quadrant এই আছেন অথবা যদি আপনার জীবনের মূল লক্ষ্য হয় নিরাপত্তা তবে আপনার এই Quadrant এই থাকা উচিত।

একটা বড়ো চাকরি করে নিঃসন্দেহে আপনি যথেষ্ট পরিমাণ টাকা রোজগার করতে পারবেন কিন্তু আপনার নিজস্ব সময় বলে প্রায় কিছুই থাকবে না।

বামদিকের এই Quadrant এর নিচের অংশে আছে S 

S অর্থাৎ Small business বা Self-employed 

যে কোনো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কিন্তু আসলে Self-employed , দেখুন ব্যবসা সেটাই যেটার মালিকানা আপনার হলেও সেটা আপনাকে ছাড়াই চলতে পারে।

কিন্তু আপনার ব্যবসা যদি আপনাকে ছাড়া না চলে অর্থাৎ আপনাকে সর্বদা সেখানে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হয়  ও উপস্থিত থাকতে হয় তবে সেটা ব্যবসা নয় সেটা Self-employment.

অর্থাৎ এক্ষেত্রে আপনি অন্য্ কারোর হয়ে নয় নিজেই নিজের জন্য চাকরি করেন।

এই ধরণের লোকেরা নিজেদের কাজের ক্ষেত্রে নিজেদের সেরা বলে মনে করে এর ফলে এরা নিজেদের কাজে অন্য কারোর হস্তক্ষেপ পছন্দ করে না এবং নিজে নিজের জন্য কাজ করতে খুব পছন্দ করে।

এরা সহজে কাউকে নিজের কাজে নিযুক্ত করতে চায় না যেহেতু এরা মনে করে তার কাজটা করার জন্য সে ছাড়া অন্য কেউই সম্পূর্ণ উপযুক্ত নয়, তাই কাউকে নিয়োগ করলেও সারাক্ষণ তার পিছনে লেগে থাকে এবং কাজের পুরো ভার অন্য কারোর হাতে পুরোপুরি ছাড়তে কখনই স্বচ্ছন্দ বোধ করে না।

এই Quadrant এ থাকা লোকেরাও কিন্তু সময়ের বিনিময়েই টাকা রোজগার করে এদের জীবনের বেশিরভাগ সময়টাই এরা টাকা রোজগারের জন্যই লাগিয়ে দেয়, অন্য্ কিছু করবার মতো সময় এদের কাছে কখনই থাকে না।

সুতরাং বামদিকের Quadrant এর যে কোনো অংশে থাকার অর্থ হলো আপনি ঠিক তত টাকা রোজগার করবেন যতটা সময় আপনি আপনার জীবন থেকে ব্যয় করবেন।

টাকা ও সময় দুটোর স্বচ্ছলতা একসাথে পাবেন না যদি আপনি E বা S Quadrant এ থাকেন। বেশি টাকা রোজগার করতে চাইলে আপনাকে সেই পরিমাণ সময় ব্যয় করতে হবে অপরদিকে আপনি টাকা রোজগার ছাড়া অন্য কোনো কাজে নিজের মতো করে সময় কাটাতে চাইলে আপনার রোজগার কমে যাবে।

এবার আসা  যাক ডানদিকের Quadrant এ , এখানে একদম ওপরে আছে B 

B অর্থাৎ Big business বা Business Owner 

বড়ো ব্যবসায়ী হলো তারা যারা এমন একটা System বা Product তৈরি করে যাতে তাদের ব্যবসা থেকে অবিরত টাকা আসতে থাকে তাদের সক্রিয় উপস্থিতি ছাড়াই।

এরা সময়ের বিনিময়ে টাকা রোজগার করে না বরং এরা এদের টাকাকেই আরো টাকা রোজগারের কাজে লাগায়। এরা যে কোনো কাজের জন্য ওই কাজের উপযুক্ত লোককে খোঁজে এবং নিজের থেকেও বেশি দক্ষতাসম্পন্ন লোককে নিজের ব্যবসায় নিযুক্ত করে।

এরা ঝুঁকি নিতে সক্ষম এবং যথেষ্ট ভাবনাচিন্তা সহই ঝুঁকি নেয়, বেশি টাকা রোজগারের জন্য এরা এদের System কে আরো উন্নত করতে থাকে অথবা নতুন Product তৈরি করে।

ঠিক এর নিচের Quadrant এ আছে I 

I অর্থাৎ Investor

এই চারটি Quadrant এর মধ্যে থাকা সমস্ত লোকেদের তুলনায় সর্বাধিক আর্থিক বা অর্থ সম্বন্ধীয় জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিরা হলো Investor.

এরা সেই সমস্ত Assets খুঁজতে অত্যন্ত দক্ষ যেগুলি থেকে ক্রমাগত টাকা আসতে থাকবে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এরা সেই সমস্ত asset সংগ্রহের জন্য নিজের নয় বরং অন্য লোকেদের টাকাকে কাজে লাগায়।

এরপর ওই Asset গুলি থেকে প্রাপ্ত টাকা কে পুনরায় বিনিয়োগ করে আরো নতুন Asset কেনার জন্য , এইভাবে এদের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ক্রমশ বাড়তেই থাকে এবং এভাবে একসময় এরা এতটাই ধনী হয়ে পড়ে যে এরা সক্রিয়ভাবে কোনোরকম কাজ না করলেও এদের অর্থের কোনো অভাব থাকে না।

অর্থ ও সময় দুইয়েরই স্বাধীনতা এরা উপভোগ করতে পারে। বিশ্বের সমস্ত ধনী ব্যক্তিরাই কিন্তু Investor.

অর্থাৎ আপনার কাছে যদি অর্থের তুলনায় নিরাপত্তার প্রাধান্য বেশি হয় এবং আপনি শুধুমাত্র টাকা রোজগারের জন্যই নিজের জীবনের বেশিরভাগ সময় অতিবাহিত করে দিতে চান তবে স্বচ্ছন্দে বামদিকের Quadrant এ থাকতে পারেন।

কিন্তু যদি আপনি নিজের জীবনের মূল্যবান সময়কে না হারিয়ে, নিজের ইচ্ছেমতো সময়কে ব্যবহার করেও আর্থিক স্বাধীনতা উপভোগ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ডানদিকের Quadrant এ আসতে হবে।

বইয়ের বক্তব্য নিজের ভাষায় আমি তুলে ধরলাম কিন্তু লেখকের ভাষায় তার জীবনের ঘটনাপ্রবাহের মাধ্যমে সম্পূর্ণ গল্পটি পড়ার জন্য বইটি সংগ্রহ করে অবশ্যই পড়বেন

rich dad poor dad 1
English Edition
rich-dad-poor-dad-in-bengali
Bengali Edition

The $100 Startup – বাংলা সারসংক্ষেপ

The Richest Man In Babylon – বাংলা সারমর্ম

The Monk Who Sold His Ferrari – আপন ঐশ্বর্য্য ত্যাগ করা এক সন্ন্যাসী

DMCA.com Protection Status

Spread the love

2 thoughts on “Rich Dad Poor Dad Summary In Bengali | রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড বাংলা সারাংশ”

Leave a Comment

error: Content is protected !!