Limitless Book Summary In Bengali ।সমৃদ্ধ মস্তিষ্ক = সীমাহীন

by

আমাদের মনের ক্ষমতা অসীম, নিজের মনকে যে সকল মানুষ নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে সেই মানুষরাই সফলতার শিখরে পৌঁছতে পেরেছে।

কিভাবে নিজের মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করবেন, কোনোকিছু খুব দ্রুত শিখবেন এবং এক সীমাহীন জীবন উপভোগ করবেন সেই সম্পর্কেই Jim Kwik এর লেখা বই হলো Limitless.

এই বইয়ের মর্মার্থ খুব সংক্ষেপে নিজের ভাষায় লিখবো এই নিবন্ধে –

Limitless Book Summary In Bengali

মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াবার জন্য লেখক এই বইয়ে একটি Limitless  Model তুলে ধরেছেন যা তিনটি জিনিস নিয়ে গঠিত 

Mindset, Motivation ও Methods 

Mindset বা মানসিকতা –

আপনার মানসিকতা আপনার জীবনের উপর অনেক বড়ো প্রভাব ফেলে, প্রত্যেক মানুষই তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী এই পৃথিবীকে দ্যাখে এবং নিজের মানসিকতা অনুযায়ী অপরকে বিচার করে। 

সুস্থ ও ইতিবাচক মনোভাব যেভাবে আপনাকে সাফল্যের পথে এগোতে সাহায্য করে তেমনই নেতিবাচক মনোভাব আপনাকে এবং আপনার মস্তিস্কের উন্নতিতেও বাধা দেয়।

নিজের মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াবার সৰ্বপ্ৰথম ধাপ হলো দৃঢ়ভাবে এটা বিশ্বাস করা যে আপনি নিজেকে উন্নত করার জন্য সর্বতোভাবে সক্ষম।

Motivation বা অনুপ্রেরণা –

কোনোকিছু আপনি শুরু করলেও বেশিরভাগ সময়ই হয়ত তা শেষ করে উঠতে পারেন না কারণ কিছুদিন পরে সেই কাজের প্রতি আপনার আগ্রহ কমতে থাকে, এজন্য কোনো কাজ শুরু করা এবং তাকে এগিয়ে নিয়ে চলার জন্য দরকার অনুপ্রেরণা, আর এজন্য নিজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার তবেই আপনি সেই কাজ করার অনুপ্রেরণা পাবেন।

Methods বা পদ্ধতি –

Mindset ও মোটিভেশন এর সাথে কোনো কাজে সাফল্য পেতে (এক্ষেত্রে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি) যা দরকার তা হলো মেথডস বা পদ্ধতি। কোনো কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য দরকার সুনির্দিষ্ট ও সুশৃঙ্খল একটি পদ্ধতি অন্যথায় সফলতা অধরাই থেকে যাবে।

methods-to-become-limitless-মস্তিষ্কের-ক্ষমতা-বৃদ্ধির-উপায়
Image Source: Limitless Book

যখন mindset ও মোটিভেশন মিলিত হয় তখন আপনি কোনো কাজের জন্য উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠেন কিন্তু সঠিক পদ্ধতি ছাড়া তা আপনি সম্পন্ন করতে পারবেন না।

যখন অনুপ্রেরণা ও পদ্ধতি মিলিত হয় তখন আপনি কাজ করতে শুরু করেন কিন্তু সঠিক ইতিবাচক মানসিকতা ছাড়া সেই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

যখন মানসিকতা ও পদ্ধতির মিলন হয় তখন আপনি কি কাজ করতে চান তা হয়তো ঠিক করতে পারেন কিন্তু তা করার জন্য চাই অনুপ্রেরণা।

অর্থাৎ এই তিনটেই অত্যন্ত দরকারি তাই যখন সীমাহীন অনুপ্রেরণা, মানসিকতা ও পদ্ধতির সমন্বয় ঘটে তখনই একজন প্রকৃতপক্ষে হয়ে ওঠে Limitless।

এই ইন্টারনেটের দুনিয়ায় আমরা সর্বদাই ব্যস্ত এবং সারাক্ষনই কোনো না কোনো তথ্য আহরণ করে চলেছি, মোবাইলের দৌলতে কারোরই নম্বর বা নাম আলাদা করে আমাদের মনে রাখতে হয় না, আর আমাদের মনঃসংযোগের ক্ষমতাও হারাতে চলেছে বলাই ভালো।

তাই এখানে লেখক কিছু উপায় বলেছেন যা চাইলে আপনার প্রয়োগ করে দেখতে পারেন

১. প্রত্যেক সপ্তাহে অন্তত আধঘন্টা সময় আলাদা করে রাখুন যে সময়টা আপনি পুরোপুরি যে কোনো ধরণের টেকনোলজি থেকে দূরে থাকবেন এবং প্রকৃতির মাঝে বা নিজের সাথে সময় কাটাবেন।

২. আপনার ফোনের সমস্ত অপ্রয়োজনীয় নোটিফিকেশন অফ করে রাখুন যাতে অযথা বারবার কোনো আওয়াজ পেলেই আপনি ফোনে উঁকি না মারেন।

৩. এমন কেউ বা কারা যাদের সাথে প্রতিনিয়ত বা প্রায়শই আপনার কথা হয় তাদের নম্বর মনে রাখার চেষ্টা করুন।

৪. কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে চেষ্টা করুন কোনোরকম ডিজিটাল ডিভাইস এর সাহায্য না নিয়ে সেই সিদ্ধান্ত নিতে। (সবক্ষেত্রে না হলেও অন্তত কিছু ক্ষেত্রে)।

যে কোনো বই খুব তাড়াতাড়ি কি করে পড়বেন ?

বেশিরভাগ সময়েই আমরা কোনো বইয়ের একদম শুরুতে যে টুকু পড়ি এবং একদম শেষে যতটা পড়ি সেটাই আমাদের মনে থাকে মাঝের অংশটা হয়তো ভুলেই যাই কারণ একটানা একই মনোযোগ নিয়ে আমরা পড়তে পারি না।

তাই একটানা না পড়ে কোনো বই মাত্র কুড়ি বা পঁচিশ মিনিট পড়ুন এবার বইটা বন্ধ করে লিখে ফেলার চেষ্টা করুন আপনি ওই পঁচিশ মিনিটে যা যা শিখেছেন।

এরপরে দ্রুত কোনোকিছু রপ্ত করার জন্য লেখক FASTER পদ্ধতির উল্লেখ করেছেন যেখানে প্রতিটি বর্ণের একটি অর্থ আছে 

F হলো Forget – কোনো কিছু পড়ার আগে আগের কোনো ধারণা ভুলে যাওয়া দরকার, কোনো কিছু শেখার সময় যদি আগেই আপনি ভেবে নেন যে এইটা তো আমি আগেই জানি তখন ওই ধারণার কারণেই আপনি নতুন কিছু সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে শিখতে বা পড়তে পারেন না, এটাই কারণ শিশুরা কোনো বিষয় খুব তাড়াতাড়ি শিখে নেয় আর বড়োরা তা পারেনা।

এরপরে ভুলে যাওয়া দরকার সেই সমস্ত জিনিস যা অদরকারি, হতেই পারে এই এই লেখা পড়তে পড়তেই আপনার মাথায় অন্য্ কোনো চিন্তা বা অন্য্ কথা মাথায় আসছে, ভুলে যান সেগুলো এবং পড়তে থাকুন, যদি খুব জরুরি কিছু মাথায় আসে তাহলে আপনি পড়ার সময় পাশে কোনো খাতা বা সাদা কাগজ রাখুন এবং তাতে সেই দরকারি কাজ বা কথাটা লিখে রাখুন এবং আবার পড়ায় মন দিন।

এবং সর্বশেষ যেটা ভোলা দরকার তা হলো আপনার সীমাবদ্ধতা, আমি পড়তে পারি না বা মনে রাখতে পারিনা বা পড়লেও মনে রাখতে পারবো না এই ধরনের সমস্ত চিন্তা ভুলে যান।আপনি সবকিছুই পারবেন , সেই ক্ষমতা আপনার আগে থেকেই আছে।

A হলো  Act – প্রথাগত শিক্ষায় আমরা প্যাসিভ লার্নিং করি কিন্তু শিক্ষা একটি active বিষয়, কোনো কিছু শেখার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো তা করা, তাই চেষ্টা করুন যা কিছু আপনি পড়ছেন বা শিখছেন তা কিভাবে আপনি কাজে লাগাতে পারেন।

S হলো State – লার্নিং হলো State-dependent অর্থাৎ আপনি কি অবস্থায় আছেন তার ওপর ও নির্ভর করে আপনি কত ভালোভাবে কিছু শিখতে পারেন, আর এই অবস্থা নির্ভর করে আপনার মানসিক ও শারীরিক দুই অবস্থার ওপর।

T হলো Teach – কোনো কিছু দ্রুত শেখার সবথেকে ভালো উপায় হলো তা অন্যকে শেখানো, কোনো কিছু এমন ভাবেই পড়ুন যাতে আপনি সেটা অন্য্ কাউকেও বোঝাতে পারেন।

E হলো Enter – আমাদের সব দরকারি কাজের সময় আমরা আগে থেকেই নির্দিষ্ট করে রাখি কিন্তু পড়ার জন্য হয়তো আলাদা কোনো সময় নির্দিষ্ট করি না, কিন্তু তা করা অবশ্যই দরকার।

R হলো Review – কোনো নতুন অংশ শুরুর আগে মনে করার চেষ্টা করুন এর আগে আপনি যতটা পড়েছেন।

এরপরে যে বিষয়টি এই সারাংশে উল্লেখ করবো তা হলো The 7 Lies অফ learning 

এই সাতটি ভুল ধারণা হলো 

বুদ্ধিমত্তা নির্দিষ্ট হয় – অনেকেরই এইরকম ধারণা থাকে যে কোনো মানুষের বুদ্ধি নির্দিষ্ট হয় এবং তা অপরিবর্তনীয় কিন্তু প্রকৃত সত্যিটা হলো আমরা যে কেউই ক্রমাগত প্রচেষ্টায় নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করে তুলতে পারি।

আমরা আমাদের মস্তিষ্কের মাত্র ১০% ব্যবহার করি – বিভিন্ন সিনেমা ও সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য নানা উৎসের মাধ্যমেই এরকম একটা কথা বহুল প্রচলিত হয়ে আছে যে আমরা নাকি আমাদের মস্তিষ্কের মাত্র ১০% ই ব্যবহার করতে সক্ষম তার বেশি করতে পারলে আমরা কি নাই কি করে ফেলতাম।

এটা একদমই ভুল ধারণা এবং তার সাপেক্ষে লেখক বহু তথ্য ও তুলে ধরেছেন, যেমন ঘুমন্ত অবস্থাতেও আমাদের মস্তিষ্কের সমগ্র অংশ সক্রিয়তা দেখায় ইত্যাদি।

ভুল করা মানেই ব্যর্থতা – Failure is the Pillar of success এই কথাটা হয়তো জানি অনেকেই কিন্তু মন থেকে কথাটা মানি কজন?

ছোটো থেকেই আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এবং পারিপার্শ্বিক নানা কারণে এরকম ধারণাই আমরা গড়ে তুলি যে সব ঠিক করেই করতে হবে, ভুল করা মানে অপরাধ।

কিন্তু বাস্তবে সমস্ত ভুলই আমাদের কিছু না কিছু শেখায় এবং ভুলের মাধ্যমেই আমরা কোনো জিনিস আরো সফলভাবে শিখতে পারি। ভুল করছেন মানেই আপনি অন্তত নতুন কিছু করার চেষ্টা করছেন।

জ্ঞানই হল শক্তি – জ্ঞান কোনো শক্তি নয়, তাকে সঠিকভাবে কাজে লাগালে তবেই তা আপনার শক্তি হয়ে উঠবে, শুধুমাত্র কোনো বিষয়ে অনেককিছু জেনে বসে থাকলে কিছুই হবার নয়, যা জানেন, যেটুকু জানেন সেটাকে কাজে লাগান।

নতুন কিছু শেখা খুব শক্ত – এই ধারণার কারণেই বেশিরভাগ লোকে নিজের পরিধির বাইরে কোনো কাজ করতে ভয় পায়, তারা ভাবে ওই বিষয়ে তো আমি কিছুই জানিনা, তাহলে কি করে করবো আর নতুন করে শিখবোই বা কি করে।

কিন্তু আপনি চাইলে সবই শিখতে পারেন , মূলমন্ত্র হলো ধারাবাহিকতা, কোনো কিছু শেখার জন্য আপনাকে অনেক সময় দিতে হবে এরকম নয়। সামান্য সময় দিন কিন্তু নিয়মিতভাবে ক্রমাগত প্রেচেষ্টা করতে থাকুন যতদিন না সেটা শিখতে পারছেন।

অন্যের সমালোচনা কে গুরুত্ব দেওয়া –  আপনি যাই করুন না কেন সেই বিষয়ে সমালোচনা করার লোক থাকবেই তাই অন্যরা কে কি ভাবল সেই নিয়ে অযথা চিন্তা করবেন না, এরকম নয় যে আপনি কারোর কোনো কথাই শুনবেন না সকলের পরামর্শকে সম্মান করুন কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অবিচল থাকুন আর নিজের ওপর আস্থা রাখুন। (এটা আপনার নিজের জীবনের সিদ্ধান্তের জন্য প্রযোজ্য কিন্তু যদি আপনার নেওয়া কোনো সিদ্ধান্তের ওপর অন্য অনেকের জীবনও নির্ভর করে তবে সকলের পরামর্শকে গুরুত্ব দেওয়াও আবশ্যকীয়)।

প্রতিভা জন্মগত হয় – প্রতিভা জন্মগত নয়, নিয়মিত অভ্যেস ও প্রচেষ্টার মাধ্যমেই যে কেউই তার মধ্যে থাকা প্রতিভার উন্মেষ ঘটাতে পারে কারণ আমরা সকলেই কোনো না কোনো প্রতিভার অধিকারী।

এরপরে লেখক অনুপ্রেরণা বা মোটিভেশন এর কথা বলেছেন 

মোটিভেশন = উদ্দেশ্য × ক্ষমতা × ছোটো ছোটো পদক্ষেপ

নিজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আপনার স্পষ্ট ধারণা থাকা উচিত, কি করছি, কেন করছি এবং কিভাবে করছি এসব সম্পর্কে যেন আপনার কাছে স্বচ্ছ ধারণা থাকে এবং যাতে সেই উদ্দেশ্য আপনি পূরণ করতে পারেন তার জন্য উপযুক্ত ক্ষমতা থাকা দরকার এবং দরকার নিয়মিত ভাবে প্রচেষ্টা।

লেখক সমগ্র বই জুড়েই নানারকম acronym ব্যবহার করেছেন, উদ্দেশ্য সম্বন্ধে তিনি যে উপায়ের কথা বলেছেন তা হলো SMART goal.

এখানে SMART এর পুরো কথা হলো 

S হলো Specific বা নির্দিষ্ট – আপনার উদ্দেশ্য একদম নির্দিষ্ট হওয়া দরকার, যেমন আমি আজ বই পড়ব এরকম ভাবলে হবে না ঠিক করুন যে আজ আপনি একদম নির্দিষ্টভাবে কত পাতা পড়বেন।

M হলো Measurable – আপনার লক্ষ্য যেন পরিমেয় হয়।

A হলো Actionable – আপনার উদ্দেশ্য পূরণের জন্য কিভাবে কাজ করবেন তা ঠিক করুন। 

R হলো Realistic – আপনার লক্ষ্য আপনার পরিস্থিতি অনুযায়ী কতটা বাস্তবিক তা মাথায় রাখুন। 

T হলো Time-based – লক্ষ্য পূরণের জন্য একটা সময়সীমা নির্ধারণ করাও খুব দরকার ঠিক করে ফেলুন কত দিনের মধ্যে আপনি আপনার লক্ষ্যে পৌঁছতে চান।

এবার এই উদ্দেশ্য পূরণের জন্য আপনাকে সচেষ্ট হতে হবে এবং তার জন্য দরকার HEART 

H হলো Healthy – Healthy বলতে আমরা বুঝি শারীরিক সুস্থতা ও সক্ষমতার কথা কিন্তু উদ্দেশ্য পূরণে সফল হতে শারীরিক স্বাস্থ্যেরই মতো মানসিক স্বাস্থ্যেরও খেয়াল রাখা জরুরি।

E হলো Enduring – আপনার লক্ষ্য আপনার কাছে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ হওয়া দরকার যাতে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও আপনি হাল না ছাড়েন।

A হলো Alluring – আপনার উদ্দেশ্য যেন আকর্ষণীয় হয় যাতে আপনি নিজে থেকেই সেই কাজের প্রতি নিয়মিত সচেষ্ট হয়ে ওঠেন।

R  হলো Relevance – এমন কোনো উদ্দেশ্যই নির্বাচন করুন যার পূরণের কারন আপনার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং সুষ্পষ্ট হয়।

T  হলো Truth – শুধুমাত্র অন্য্ কাউকে দেখে বা কারোর কথায় প্রভাবিত হয়ে লক্ষ্য নির্দিষ্ট করবেন না এমন কিছুই নির্বাচন করুন যা আপনি নিজে অর্জন করতে চান।

সময় নিয়ে ভাবুন যে আপনি কে এবং আপনি জীবনে ঠিক কি কি পেতে চান

মোটিভেশন এর জন্য উদ্দেশ্য ছাড়াও যে বিষয়টি খুব জরুরি তা হলো ক্ষমতা আর মস্তিষ্কের ক্ষমতা বা বুদ্ধিমত্তা বৃদ্ধির জন্য লেখক কিছু Brain Food এর কথা বলেছেন সেগুলি হলো – 

Avocados, Blueberries, ব্রকোলি, ডার্ক চকোলেট , ডিম্, সবুজ শাকসবজি, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সম্পন্ন মাছ, হলুদ, ওয়ালনাট এবং জল।

এই সমস্ত খাবার ছাড়াও মস্তিষ্কের জন্য দরকারি হলো নিয়মিত শারীরিক কসরত বা ব্যায়াম এবং অবশ্যই পরিমিত পরিমাণ ঘুম।

এরপর লেখক যে উপায়ের কথা বলেছেন তা হলো Killing ANTs , না না পিঁপড়ে মারতে হবে না এই ANT হলো automatic negative thoughts যা মস্তিষ্কের সমৃদ্ধির জন্য ক্ষতিকারক।

আপনি নেতিবাচক চিন্তা বন্ধ করতে পারবেন না কিন্তু চাইলেই আপনি তাকে ইতিবাচক চিন্তা দ্বারা প্রতিস্থাপিত করতে পারেন যার জন্য দরকার অভ্যেস এই সম্বন্ধে আগেই আলোচনা করেছিলাম The Monk Who Sold His Ferrari  র বাংলা সারমর্মে

এছাড়াও দরকার পরিষ্কার পরিছন্ন পরিবেশ এবং এমন লোকজনের সঙ্গ যারা ইতিবাচক, আপনি যদি নিয়মিত এরকম লোকদের সাথেই ওঠাবসা করেন যারা নেতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন তাহলে আপনার উন্নতি সম্ভব নয়।

এছাড়াও সমস্ত উদ্বিগ্নতা দূরে রাখুন এবং সময়ের সাথে সাথে নতুন কিছু না কিছু শিখতে থাকুন, এবং সময় করে নিজের মনকে বিশ্রামও দিন।

এর পরের ধাপ হলো নিয়মিতভাবে ছোটো ছোটো পদক্ষেপ নেওয়া 

লেখক এখানে Dr. B. J. Fogg এর Fogg Behavior Model এর কথা বলেছেন এই Model অনুযায়ী মোটিভেশন বা অনুপ্রেরণার কারণগুলি হলো – 

Pleasure/Pain অর্থাৎ আনন্দ বা দুঃখ , Hope/Fear অর্থাৎ আশা বা ভয় এবং সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা।

Fogg ability বা কিছু করার ক্ষমতাকে simplicity র সাথে তুলনা করেছেন এবং ছটি ভাগে ভাগ করেছেন 

১. সময় – যখন কোনো কাজ করার পর্যাপ্ত সময় আমাদের হাতে থাকে তখন সেই কাজকে আমরা সহজ বলেই মনে করি। 

২. টাকা – যে কাজের ক্ষেত্রে আর্থিক সংকুলান দেখা দেয় তাকে আমরা সহজ মনে করি না। 

৩. শারীরিক শ্রম – যে কাজে শ্রম কম লাগে তাকেও আমরা সহজ বলেই ধরি। 

৪. চিন্তার শ্রম – যে কাজে প্রচুর মাথা খাটাতে হয় সেখানে আমরা কাজটা কঠিন বলে এড়িয়ে যাই। 

৫. সামাজিক বিচ্যুতি – এটা পূর্বে আলোচিত সামাজিক গ্রহনযোগ্যতার মতোই কাজ করে। 

৬. নিয়মিত রুটিনের বাইরে কোনো কাজ করতে হলে সেটাও আমরা সহজ বলে মনে করি না।

এরপরে লেখক অভ্যাস গঠনের জন্য যে acronym ব্যবহার করেছেন তা হলো WIN 

W হলো Want – আপনি কোনো বিষয়ে অভ্যেস তখনই গড়ে তুলতে পারবেন যখন আপনি নিশ্চিতভাবে জানবেন যে আপনি সেটা অতি অবশ্যই চান।

I হলো Innate – আপনি যে অভ্যেস গড়ে তুলতে চান তা যদি আপনার সহজাত প্রবৃত্তির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তবে তা গড়ে তোলা সহজ হবে।

N হলো Now – এখনই করুন, অভ্যেস গড়ে তোলা শুরু করুন একটুও দেরি না করে।  

এর পরে লেখক বলেছেন Flow এর বিষয়ে Flow হলো সেই বিশেষ অবস্থা যে সময়ে আমরা কোনো কাজে সম্পূর্ণ মগ্ন হয়ে যাই এবং সময় কোথা দিয়ে চলে যায় তা বোঝাই যায় না।

এই অবস্থায় কোনো কাজ করার সময় মনেই হয়না যে কাজটার জন্য আমাদের আলাদা করে কোনো পরিশ্রম করতে হচ্ছে।

আর এই অবস্থায় পৌঁছনোর জন্য লেখক যে উপায়গুলি বলেছেন সেগুলি হলো 

১. সমস্ত distraction কে দূরে রাখা

২. আলাদা করে নিজেকে সময় দেওয়া এবং কোনো কাজের জন্য পর্যাপ্ত সময় রাখা 

৩. এমন কিছু করা যা করতে আপনি ভালোবাসেন 

৪. নিজের লক্ষ্য সম্পর্কে সুষ্পষ্ট ধারণা রাখুন 

৫. সামান্য হলেও নিজেকে চ্যালেঞ্জ করুন 

এর পরবর্তীতেও লেখক বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেছেন এবং Focus ও কিভাবে দ্রুত পড়বেন ও স্মৃতিশক্তি কিভাবে বাড়াবেন  সেই বিষয়ে নানা উপায়ের কথা বলেছেন, যদিও বইটি অত্যধিক পরিসংখ্যান সম্বলিত হওয়ায় পড়তে বিরক্তিকর লাগতে পারে তা সত্ত্বেও পড়তে চাইলে আসল বইটি সংগ্ৰহ করুন।

থিঙ্ক অ্যান্ড গ্রো রিচ – Think & Grow Rich Bengali Summary

The Power Of Your Subconscious Mind In Bengali

DMCA.com Protection Status

Spread the love

Leave a Comment

error: Content is protected !!