করোনা ভাইরাসকে রুখতে মাস্কের মতোই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও খুবই জরুরি। স্যানিটাইজার সঠিকভাবে ব্যবহার করলে তবেই ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া রোধ করা যেতে পারে।
রাস্তায় খোলা বাজারের বা অনলাইনের যেকোনো ব্র্যান্ডের স্যানিটাইজার চোখ কান বন্ধ করে ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ কারণ স্যানিটাইজারের কোয়ালিটি ঠিক না হলে সেগুলোর ব্যবহারের যৌক্তিকতা নেই, উপরন্তু হতে পারে ত্বকের সমস্যা।
তাই যেকোনো স্যানিটাইজার কিনে নিচের পদ্ধতি অনুযায়ী দেখে নিন তার কোয়ালিটি সঠিক কিনা।
WHO এর নির্দেশিকা অনুযায়ী সর্বনিম্ন ৬০% অ্যালকোহল বিশিষ্ট স্যানিটাইজারই ব্যবহারযোগ্য।
কী করে স্যানিটাইজারের কোয়ালিটি চেক করবেন ?
১. টিস্যু পেপার টেস্ট –
একটি টিস্যু পেপার নিয়ে সেটির মাঝে বল পয়েন্ট পেন দিয়ে একটা স্পষ্ট করে বৃত্ত বা গোল আঁকুন। ওই গোলটির মধ্যে কয়েক ফোঁটা স্যানিটাইজার ফেলে কিছু সময় পরে যদি দেখেন যে পেন দিয়ে আঁকা গোল দাগটি ঘেঁটে গেছে এবং কালিটি ছড়িয়ে পড়েছে, তার মানে স্যানিটাইজারটি হাতকে জীবাণুমুক্ত করার উপযোগী।
কিন্তু যদি দেখেন আপনার আঁকা গোলটির কালি ঘেঁটে যায়নি কিন্তু স্যানিটাইজার গোল দাগটিকে না ঘেঁটে ছড়িয়ে পড়েছে, তাহলে জানবেন আপনার স্যানিটাইজারটি ব্যবহারের উপযুক্ত নয় কারণ তাতে যথেষ্ট পরিমানে অ্যালকোহল নেই।
এটা ঘটে কারণ পেপার ক্রোমাটোগ্রাফি অনুযায়ী বল পেনের কালি জলে দ্রাব্য নয়, শুধুমাত্র অ্যালকোহলেই দ্রাব্য।
ধরুন আপনি একটা লোকাল স্যানিটাইজার কিনলেন যার কোয়ালিটি নিয়ে নিশ্চিত নন, সেই স্যানিটাইজার ব্যবহার করেও যদি রোগ ছড়ায় তাহলে তা না ব্যবহার করাই ভালো।
কিন্তু এখন যে হারে করোনা ছড়াচ্ছে তাতে একটি বাড়িতে কেউ আক্রান্ত হলেই সেই বাড়ির প্রত্যেকের আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকছে অতিমাত্রায়।
এই অবস্থা থেকে বাঁচতে হলে যদি কেউ আক্রান্ত হয় তার পরিবারের সবাইকে সুরক্ষিত রাখতে স্যানিটাইজার স্প্রে ছাড়া গতি নেই।
বারবার সব জায়গায় বাড়িতে স্যানিটাইজার স্প্রে করলে, রোগীকে আলাদা রাখলে তবেই সম্ভব হচ্ছে রোগ ছড়ানো আটকানো।
এছাড়াও যে কোনো জিনিস আগে স্যানিটাইজার দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে তবে ঢোকাতে বলছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। যেমন মোবাইল ফোন থেকে খাবার ছাড়া অন্য যেকোনো জিনিসপত্র।
এই ভাবে বহু পরিবার সফল হচ্ছে করোনাকে রুখতে। যেগুলো ধোয়া যায় সেগুলো ধুয়েই নিন। তাই স্যানিটাইজার ও স্প্রে করার বোতল কিনে রাখুন এবং স্যানিটাইজার স্প্রে করুন।
স্যানিটাইজার ব্যবহার করলে প্রোডাক্টের সম্বন্ধে ভালোভাবে জেনে তবেই ব্যবহার করুন। ব্যবসা সবাই করতে পারে, কিন্তু আপনার জীবন আপনাকেই সুরক্ষিত রাখতে হবে।
স্যানিটাইজার না পেলে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন, কিন্তু মিথ্যে জিনিসের উপর ভরসা করে এই মহামারীতে নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না।
সেরকমই কয়েকটি স্যানিটাইজারের নমুনা দেওয়া হলো দেখে নিন –
মার্গো হ্যান্ড স্যানিটাইজার
১. রোগসৃষ্টিকারি জীবাণু থেকে ৯৯.৯% সুরক্ষা দেয়।
২. জেল জাতীয় স্যানিটাইজার।
লাইফবয় হ্যান্ড স্যানিটাইজার
১. ৬০% অ্যালকোহল সমৃদ্ধ জেল জাতীয় স্যানিটাইজার যা হাতে লাগানোর সঙ্গে সঙ্গেই জীবাণু মারতে সক্ষম।
২. সাথে আছে গ্লিসারিন যা ত্বকের কোমলতা বজায় রাখে, কারণ আমরা সবাই জানি বারবার স্যানিটাইজার ব্যবহার করলে হাত খুবই খসখসে হয়ে যায়। কিন্তু এই প্রোডাক্টটি ব্যবহার করলে এতোটা শুষ্কতা আসে না গ্লিসারিন থাকার দরুন।
ডেটল হ্যান্ড স্যানিটাইজার
১. ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস ও ফাংগাসের উপর একই রকম কার্যকরী।
২. ক্লিনিক্যাল মানের লিক্যুইড জাতীয় স্যানিটাইজার।
ট্রাই অ্যাকটিভ স্যানিটাইজার
১. জেল জাতীয় স্যানিটাইজার
২. ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও জার্ম্স সঙ্গে সঙ্গে মেরে ফেলতে সক্ষম।
এশিয়ান পেইন্টস ভাইরোপ্রোটেক্ট অ্যাডভান্স লিক্যুইড হ্যান্ড স্যানিটাইজার
১. ৭৫% অ্যালকোহল যুক্ত লিকুইড স্যানিটাইজার
২. ত্বকের জন্য নিরাপদ। এটি বিভিন্ন সাইজে পাওয়া যাবে।
হিমালয়া অরেঞ্জ হ্যান্ড স্যানিটাইজার
১. প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরী জেল বেসড হ্যান্ড স্যানিটাইজার যাতে ৬০% অ্যালকোহল আছে।
২. খুব সুন্দর অরেঞ্জ গন্ধ বিশিষ্ট। যদিও আরো অনেক ফ্লেভার বিশিষ্ট স্যানিটাইজার আছে এই ব্র্যান্ডের।
হিমালয়া লেমন হ্যান্ড স্যানিটাইজার
১. প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরী জেল বেসড হ্যান্ড স্যানিটাইজার যাতে ৬০% অ্যালকোহল আছে।
২. লেবুর গুণাবলী ও গন্ধযুক্ত যা হাতের জন্যও ভালো। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
ডাবর লেমন হ্যান্ড স্যানিটাইজার
১. আয়ুর্বেদিক উপকরণ দিয়ে তৈরী জেল বেসড হ্যান্ড স্যানিটাইজার
২. ৬০% অ্যালকোহল দিয়ে তৈরী ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া মারতে সক্ষম। এটি ছাড়াও ডাবর এর আরো ২ টি এরকমই হ্যান্ড স্যানিটাইজার আছে, একটা রেগুলার ফ্লেভারের অন্যটি স্ট্রবেরি ফ্লেভারের।
সলিমো জেল হ্যান্ড স্যানিটাইজার
১.অ্যালকোহল এর পরিমান ৮০% , অ্যালোভেরা, লেমন অয়েল ও ভিটামিন ই যুক্ত যা ত্বক কে শুস্ক হতে দেয়না
২. এটি জেল জাতীয় স্যানিটাইজার।একসাথে ২ টি স্যানিটাইজার পাওয়া যাবে।প্রতি টি ২০০ ml
স্যানিটাইজারের মতোই হ্যান্ডওয়াশ ও একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস তাই তিনটি নমুনা দেওয়া হলো দেখে নিন –
- ভেপার মেশিন কি ? তার ব্যবহার ও গুরুত্ব
- পালস অক্সিমিটার কি ? ব্যবহার ও তার গুরুত্ব
- মাস্কের প্রয়োজনীয়তা কি ? কি ধরণের মাস্ক কার দরকার ?
- সারফেস ডিসইনফেকট্যান্ট কি ? বহুল বিক্রিত ১২ টি সারফেস ডিসইনফেকট্যান্ট
- করোনা থেকে বাঁচার ঘরোয়া উপায়গুলি কি কি ? দৈনিক কোন কাজগুলি করবেন ?