সারফেস ডিস্ইনফেকট্যান্ট বা জীবাণুনাশক স্প্রে হলো সেই কেমিক্যাল যা যে কোনো কঠিন জিনিসের উপর স্প্রে করলে জিনিসটিকে জীবাণুমুক্ত করে। করোনা অতিমারীর এই সময়ে বাইরে থেকে যে কোনো জিনিসই বাড়িতে জীবাণুমুক্ত না করে আনা বিপজ্জনক।
তাই আগে এই ধরণের কেমিক্যাল যেখানে শুধুমাত্র হসপিটালে ব্যবহার হতো এখন তা বাড়িতেও অপরিহার্য।
বাইরের থেকে ঘুরে আসার পর মোবাইল, মানি ব্যাগ, এমনি যে কোনো ব্যাগ বা অনলাইন শপিং এর জিনিসের প্যাকেজিং প্যাকেটে, বাড়ির দরজার হাতল, যদি বাড়িতে কোডিভ আক্রান্ত থাকে তাহলে তো সব জায়গাতেই ডিস্ইনফেকট্যান্ট স্প্রে করতে হবে।
সারফেস ডিস্ইনফেকট্যান্ট দিয়ে জীবাণু মুক্ত করা তাই এখন আমাদের জন্য আবশ্যিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্যানিটাইজারের সাথে সারফেস ডিস্ইনফেকট্যান্ট এর তফাৎ কি ?
সারফেস ডিস্ইনফেকট্যান্ট শুধুমাত্র নির্জীব জিনিসের উপরই প্রয়োগ করা যায়। আমাদের ত্বকের উপর তা ব্যবহার না করাই ভালো।
ডিস্ইনফেকট্যান্ট ও স্যানিটাইজার দুয়েরই কেমিকাল কম্পোজিশন আলাদা, তাই ডিস্ইনফেকট্যান্ট আপনি স্যানিটিজারের বদলে ব্যবহার করলে তা ত্বকের ক্ষতি করবে।
এগুলো কোনো অ্যান্টিসেপ্টিক নয়।
ডেটল বা স্যাভলন যা আমরা ব্যবহার করি আমাদের শরীরে কোথাও কেটে ছড়ে গেলে, সেগুলো অ্যান্টিসেপ্টিক।
তাই কোনো সারফেস ডিস্ইনফেকট্যান্ট মোটেই নিজের শরীরে ব্যবহার করবেন না, তা প্রাণঘাতী।
ডেটল এবং স্যাভলন এই দুই কোম্পানিও যদিও সারফেস ডিস্ইনফেকট্যান্ট তৈরী করে কিন্তু সেগুলো ব্যবহার হয় কোনো জিনিসকে জীবাণু মুক্ত করতে বা ঘর জীবাণুমুক্ত করতে।
সারফেস ডিস্ইনফেকট্যান্ট কি দিয়ে বানানো হয়?
ইথাইল অ্যালকোহল, আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল, ক্লোরিন ও ক্লোরিন যৌগ (হাইপোক্লোরাইট ), ফর্মালডিহাইড, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড, আইডোফোর, পার অ্যাসিটিক অ্যাসিড, ফেনোলিকস এবং অ্যামোনিয়াম যৌগ।
সারফেস ডিস্ইনফেকট্যান্ট দু ধরণের হয়। একটা স্প্রে, অন্যটা তরল। আপনি আপনার সুবিধামতো ব্যবহার করবেন।
চলুন যেগুলো বাজারে সবচেয়ে বেশী বিক্রীত সেরকমই কয়েকটা সারফেস ডিস্ইনফেকট্যান্ট এর সম্পর্কে দেখে নিন ও বাড়িতে বসেই আমাজনে অর্ডার করুন —-
স্যাভলন সারফেস ডিস্ইনফেকট্যান্ট
১. স্যাভলন সারফেস ডিস্ইনফেকট্যান্ট জলে মিশিয়ে বা স্প্রেয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাস, মোল্ডস কে ধ্বংস করতে পারে।
২. যে কোনো কঠিন বস্তুর উপরিতল যেমন চাবি,দরজার নব, হাতল, চেয়ার, টেবিল প্রভৃতিকে জীবাণুমুক্ত করতে পারে।
লাইফবয় জার্ম কিল স্প্রে
১. ব্যাকটেরিয়া, করোনা ভাইরাস, H1N1 / H5N1 ভাইরাস সাধারণ সর্দি কাশির ভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রভৃতি কে নষ্ট করতে সক্ষম।
২. এটা সারফেস ডিস্ইনফেকট্যান্ট হিসেবেও কাজ করে আবার স্যানিটাইজার হিসেবে ত্বকেও ব্যবহার করার জন্য নিরাপদ। (তামা ও ইলেক্ট্রিক জিনিসে ব্যবহার করবেন না)
ডেটল ডিস্ইনফেকট্যান্ট স্প্রে
১. দুটি ভিন্ন গন্ধের ডিস্ইনফেকট্যান্ট স্প্রে বোতল একত্রে পাওয়া যাচ্ছে কঠিন ও নরম যেকোনো সারফেস এর উপর ই স্প্রে করা যাবে।
2.২. ব্যাকটেরিয়া, করোনা ভাইরাস, H1N1 ভাইরাস, সাধারণ সর্দি কাশির ভাইরাস ,ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রভৃতি কে নষ্ট করতে সক্ষম
নেচার প্রোটেক্ট জার্ম কিল স্প্রে উইথ নিম
১. কঠিন, কোমল যেকোনো সারফেসে ব্যবহার করা যায়। ত্বকে ব্যবহার করাও নিরাপদ, এতে আছে নিমের নির্যাস, যা এর কার্যকারিতাকে বাড়িয়ে দেয়, কারণ সবাই জানে নিম বাতাসকে পরিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে।
২. হাত, মোবাইল, দরজার নব, হাতল, চেয়ার, টেবিল, টয়লেট সিট্ প্রভৃতি সহ যেকোনো বস্তুর উপরিতল কে জীবাণুমুক্ত করতে পারে।
গোদরেজ প্রোটেক্ট ডিস্ইনফেকট্যান্ট স্যানিটাইজার স্প্রে সারফেস ও এয়ার (অ্যালকোহল বেসড)
১.বাতাসে ও সারফেসে থাকা যেকোনো ভাইরাস ও ব্যাকেটরিয়া কে নষ্ট করতে সক্ষম।
২. মোবাইল , দরজার নব , হাতল ,চেয়ার , টেবিল,টয়লেট সিট্ , বেসিন ,সিঙ্ক প্রভৃতি সহ যেকোনো বস্তুর উপরিতল কে জীবাণুমুক্ত করতে পারে। লেবু সুগন্ধি ভ্যারাইটি ও পাওয়া যায়।
LUXOR ন্যানো সারফেস ডিস্ইনফেকট্যান্ট স্প্রে (কম্বো প্যাক)
১.এই ডিস্ইনফেকট্যান্ট স্প্রের বৈশিষ্ট হল স্প্রে করার ১ ঘন্টা পর পর্যন্ত জায়গাটি জীবাণুমুক্ত থাকে।
২. মোবাইল, দরজার নব, হাতল, চেয়ার, টেবিল, টয়লেট সিট্, বেসিন, সিঙ্ক, সোফা, কার্পেট প্রভৃতি সহ যেকোনো বস্তুর উপরিতলকে জীবাণুমুক্ত করতে পারে।
বডিগার্ড ডিস্ইনফেকট্যান্ট স্প্রে
১. যেকোনো সারফেসে স্প্রে করা যাবে তা কঠিন হোক বা কোমল। বাচ্চাদের খেলনা জীবাণুমুক্ত করার জন্যও এটা নিরাপদ। গাড়ির সিট্, সোফা, বাথরুম, ল্যাপটপ যেকোনো জায়গায় স্প্রে করা যাবে।
এবার দেখে নেওয়া যাক যেকোনো ইলেক্ট্রনিক জিনিস যেমন ফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, আইপড, ট্যাবলেট, স্মার্ট ওয়াচ এর ক্ষেত্রে কি সারফেস ডিস্ইনফেকট্যান্ট ব্যবহার করা উচিত।
ন্যানো গার্ড গ্যাজেট ডিস্ইনফেকট্যান্ট
১. এতে ন্যানো গার্ড টেকনোলজি ব্যবহার হয়েছে যা ১০০ ধরণের ভাইরাস ও প্যাথোজেন ব্যাকটেরিয়া মারতে পারে।
২. একবার স্প্রে করলে পুরো একবছর সেই জিনিসটিকে জীবাণুমুক্ত রাখে। ফলে যদি কোনো ভাইরাস আক্রান্ত ওই ইলেক্ট্রনিক জিনিসটি ব্যবহার করলেও, তার সারফেস থেকে অন্য কারোর শরীরে ভাইরাস ছড়াবে না। তাই রোজ স্প্রে করার দরকার পড়বেনা।
৩. ফোন, ল্যাপটপ,কম্পিউটার, আইপড, ট্যাবলেট, স্মার্ট ওয়াচকে জীবাণুমুক্ত করতে ব্যবহার করা হয়।
ব্যাকটো – ৫ মাল্টি সারফেস ডিস্ইনফেকট্যান্ট স্প্রে
এই ব্র্যান্ডটি জীবাণুমুক্তকরণের দ্রব্যই বিশেষ ভাবে বানায়।
কঠিন, কোমল যেকোনো সারফেস জীবাণুমুক্ত করতে পারে এই ডিস্ইনফেক্ট্যান্ট স্প্রে।
লাইজল সারফেস ডিস্ইনফেকট্যান্ট লিকুইড
১. এটা প্রায় সব বাড়িতেই মেঝেকে জীবাণুমুক্ত রাখতে ব্যবহার করা হয় জলের সাথে মিশিয়ে বা শুধু তরল হিসেবেও। ১০০ ধরণের দাগ তুলতেও সক্ষম এই ডিস্ইনফেকট্যান্ট।
করোনা অতিমারীর সময় এটা ব্যবহার যথেষ্ট প্রয়োজনীয়, বিশেষ করে যদি বাচ্চারা বাড়িতে থাকে কারণ বেশি সময় তারা মাটিতেই খেলা করে।
greenbrrew এয়ার স্যানিটাইজার ডিস্ইনফেকট্যান্ট স্প্রে
১. বাতাসে ভাসমান যেকোনো ভাইরাসকে মেরে ফেলতে সক্ষম এই ডিস্ইনফেকট্যান্ট।
২. যে কোনো সারফেসে, বাথরুমে, গাড়িতে, জামাকাপড়ে, ব্যবহারযোগ্য।
সিপলা সিপ্ হ্যান্ড সারফেস ডিস্ইনফেকট্যান্ট স্প্রে
এটি খুবই বড়ো ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি CIPLA দ্বারা নির্মিত ডিস্ইনফেকট্যান্ট স্প্রে।
কঠিন কোমল যেকোনো সারফেসে কাজ করবে।