মাস্কের গুরুত্ব :
2020 এর প্রথম থেকে করোনা মহামারি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যে মারাত্মক পরিবর্তন এনেছে, তা হলো আমাদের বাইরে বেরিয়ে প্রাণ ভরে শ্বাস নিতে ভুলিয়ে দিয়েছে।
আগে যা কিনা শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ছিল আজ তার প্রয়োজন আমজনতার, যেখানেই যেতে হবে মাস্ক এখন নিত্যসঙ্গী।
আর যাদের রোজ বাইরে বেরোতেই হয়, তাদের করোনার মারণ ছোবল থেকে বাঁচতে এবং নিজের পরিবারকে বাঁচাতে মাস্ক পড়তেই হবে।
আমরা মাস্ক পড়লে তবেই সারা পৃথিবী আবার আগের অবস্থায় ফিরবে। যদিও মহামারি বিশেষজ্ঞদের মতে করোনা এখনই যাবার নয়।
তাই যতদিন না সারা দেশের ভ্যাকসিনেশন সম্পূর্ণ হচ্ছে, আমাদের মাস্ক আর স্যানিটাইজার্ ছাড়া গতি নেই।
প্রশ্ন হল কোন ধরণের মাস্ক কোভিড -১৯ ভাইরাস কে আটকাতে পারবে ?
রাস্তায় বেরোলেই বিভিন্ন লোকের মুখে বিভিন্ন রকম মাস্ক। কারোর সার্জিকাল মাস্ক তো কারোর N-৯৫, কারোর আবার পাতলা কাপড়ের মাস্কে মুখ ঢাকা।
বিভিন্ন জায়গায় গেলে সবাই বিভিন্ন মাস্ক পরে থাকলেও চিন্তা একটাই যে তা করোনা ভাইরাস ছড়ানোকে আটকাতে পারবে তো?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দ্বারা প্রচারিত ও কার্যক্ষত্রে সত্যি ফল দিয়েছে এরকম বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে যে তথ্য উঠে এসেছে তা হল –
বাজারে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তিন ধরণের মাস্ক পাওয়া যায়।
১. কাপড়ের মাস্ক
২. সার্জিক্যাল মাস্ক
৩. N-৯৫ মাস্ক
১. কাপড়ের মাস্ক : কাপড়ের মাস্ক (একটি স্তর বিশিষ্ট বা রুমাল জাতীয় কিছু) কোভিড ভাইরাসকে বিন্দুমাত্র আটকাতে পারেনা।
তিনটি স্তর বিশিষ্ট কাপড়ের মাস্ক ই শুধুমাত্র করোনা ভাইরাসকে আটকাতে কিছুটা সক্ষম তবে এই মাস্ক তারাই ব্যবহার করতে পারেন যারা কোনো কোভিড আক্রান্তদের সংস্পর্শে নেই।
আপনার আশেপাশে যদি লক্ষণবিহীন কোনো কোভিড আক্রান্ত থাকে তাহলে আপনাকে এই মাস্ক কিছুটা সুরক্ষা দিয়ে থাকে। কিন্তু যাদের খুব ভিড় জায়গায় বা অনেক লোকের কাছে থাকতে হয়, তাদের জন্য এই মাস্ক কার্যকরী নয়।
রাস্তায় বেরোলে এই মাস্ক পড়তে পারেন বা নিজেই পরিবারের সাথে কোথাও বাইরে যাচ্ছেন তাহলে এই মাস্ক পড়তে পারেন।
এই ধরণের মাস্কের ৩ টি স্তর। এর মধ্যে প্রথম স্তরটি ( ভিতরে মুখের সাথে যে স্তর লেগে থাকে ) সুতির, দ্বিতীয় স্তরটি পলিয়েস্টার ও তৃতীয় স্তরটি দুয়ের মিশ্রিত কাপড় হওয়া বাঞ্ছনীয়।
বয়স্ক মানুষ যারা সার্জিকাল মাস্ক পড়তে পারেন না, বা যারা কোভিডে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে আছে, তারা যদি সার্জিকাল মাস্ক পড়তে না পারেন, কারণ তাদের শ্বাসকষ্ট হয় এবং তাদের যদি হাঁচি কাশি না থাকে তাহলে দরকার পড়লে পড়তে পারেন এই মাস্ক।
সেরকমই কিছু মাস্কের উদাহরণ তলায় দেওয়া হল, দেখে নিন —
রাজস্থানি প্রিন্টেড মাস্ক
১. খুব সুন্দর রাজস্থানী প্রিন্ট করা, বিভিন্ন রঙের, ত্রিস্তরীয়, কাপড়ের তৈরী, ইলাস্টিক লাগানো মাস্ক।
২. একটি সেট কিনলে ৫ টি মাস্ক পাওয়া যাবে।
Lee Cooper এর সুতির কাপড়ের মাস্ক
১. এতে ভাইব্রো লক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে যা যেকোনো ভাইরাস আটকাতে সক্ষম। খুবই উন্নত মানের কাপড় দিয়ে তৈরী যা মাস্কটিকে খুবই নরম বানায়।
২. বিভিন্ন রঙের, ধোয়া যাবে এমন সুতির মাস্ক যা পড়তে খুব ই আরামদায়ক। যারা শুধুমাত্র ব্র্যান্ডেড জিনিস ই ব্যবহার করেন তাদের জন্য খুবই ভালো।
২. সার্জিকাল মাস্ক – করোনা মহামারীর প্রথম দিকে সাধারণ মানুষ যারা স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত নয়, তাদের এই মাস্ক পড়তে বারণ করা হচ্ছিলো কারণ সাধারণ সব মানুষ এই মাস্ক কিনতে শুরু করলে, মাস্কের ঘাটতি হবে এবং সত্যি চিকিৎসা ক্ষেত্রের সাথে যুক্ত মানুষরা তা পাবেন না।
কিন্তু এখন এই মাস্কের যোগান মোটামুটি ভালোই আর সরাসরি যারা চিকিৎসা দিয়ে থাকেন কোভিড আক্রান্তদের তারা এই মাস্ক পড়েন না।
কারণ সার্জিকাল মাস্ক করোনা আক্রান্তরা পড়তে পারেন, তাতে আক্রান্তের থেকে ভাইরাস হাঁচি কাশির মাধ্যমে কম ছড়ায় কিন্তু যদি ভাইরাস বাতাসে থাকে তাহলে সার্জিকাল মাস্ক সে ভাইরাসকে আটকাতে পারেনা।
তার উপর এগুলোর ফিটিংও আলগা হয় তাই সাধারণ মানুষ সার্জিকাল মাস্ক পড়তেই পারেন যদি ২ টো একসাথে পড়েন।
সেরকম ই সুন্দর ফিটিং যা আপনার মুখ কে বেশিরভাগটাই কভার করতে পারে সেরকম কিছু মাস্কের নমুনা দেওয়া হল —
সার্জিক্যাল মাস্ক :-
তিনটি লেয়ার বিশিষ্ট, রং – হালকা নীল, নাকের জায়গায় aluminium ক্লিপ লাগানো আছে ভালো ভাবে ফিট করার জন্য।
একটি সেট এ ১০০ টা আছে।
(১০০ টা মাস্ক পাবেন)
N-৯৫ :
N – ৯৫ ই হলো সেই মাস্ক যা সাধারণ মানুষ অনেকটাই নিশ্চিন্ত হয়ে পড়তে পারবে, করোনা থেকে বাঁচার জন্য।
এবং যারা বাইরে কাজ করে তাদের জন্য অতি আবশ্যক।
N অক্ষরটির অর্থ – Non -Oil মানে যদি আপনার চারপাশে কোনো Oil based কণা না থাকে তাহলে এটা আপনি ব্যবহার করতে পারে।
৯৫ এর অর্থ এটা ৯৫% কার্যকরী যেকোনো সুক্ষ কণা আটকাতে। যদি ৯৯ লেখা থাকে তাহলে ৯৯% কার্যকরী।
এই ধরণের মাস্ক ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক পলিপ্রোপাইলিন ফাইবার দিয়ে তৈরী হয়। ভালভ যুক্ত N -৯৫ মাস্কে শ্বাস নিতে কিছুটা সুবিধা হয়। যদিও শ্বাসকষ্টর সমস্যা না থাকলে ভালভ ছাড়াও পড়তে পারেন।
N-৯৫ মাস্ক ২ ধরণের হয়।
১. সার্জিকাল N -৯৫ respirator 3 M Model 1860
২. স্ট্যান্ডার্ড N -৯৫ respirator 3 M Model 8210
এই উপরের ২ টি মাস্কের কার্যকারিতা সমান। ২ টি মাস্কই নিঃশ্বাস ও প্রশ্বাস নেওয়ার বায়ুকে ফিল্টার করতে পারে।
স্ট্যান্ডার্ড N -৯৫ respirator 3 M Model 8210 মাস্কটি তরল থেকে সুরক্ষিত নয়।
স্ট্যান্ডার্ড N -৯৫ respirator 3 M Model 8210 এটা তরল থেকে সুরক্ষিত। যদিও এই মাস্কের দরকার আমাদের নেই।
এবার দেখে নেওয়া যাক এমন কয়েকটি মাস্ক যা আমাদের একান্ত প্রয়োজন —-
N – ৯৫ :-
একটা সেট এ ১০ টা মাস্ক আছে, রং-সাদা। পুরুষ মহিলা উভয়েই ব্যবহার করতে পারবে।
প্রতিটি মাস্ক ৬ টি লেয়ার বিশিষ্ট, পিছনে ইলাস্টিক দেওয়া, ধোয়া যাবে।
কার্যকারিতা – ৯৫ %
(১০ টা থাকবে)
N -৯৫
৬ টি লেয়ার বিশিষ্ট, নাকে ফিট করার জন্য ক্লিপ আছে।
DRDO স্বীকৃত। ধোয়া যাবে।
N -৯৫ :-
৫ টি লেয়ার বিশিষ্ট মাস্ক, ভাল্ভ ছাড়া, ধোয়া যাবে, হালকা নীল।
সুতির তৈরী।
একটা সেট এ ২০ টা আছে।
N – ৯৫
৫ টি লেয়ার বিশিষ্ট। একটা সেটে ১০ টা পাওয়া যাবে।
রং – সাদা, ভালভ ছাড়া, ধোয়া যাবে, ভাঁজ করা যাবে, যথেষ্ট আরামদায়ক।