- পাল্স অক্সিমিটার কি ?
- পাল্স অক্সিমিটার কেমন দেখতে এবং তা কিভাবে কাজ করে ?
- পালস অক্সিমিটার কারা ব্যবহার করে ? কাদের জন্য উপযুক্ত ?
- পালস অক্সিমিটার খারাপ কিনা বুঝবেন কি করে?
- পালস অক্সিমিটার ব্যবহারের নিয়ম বা সঠিক পদ্ধতি কি?
- কোন কোন কারণে পালস অক্সিমিটার রিডিং ভুল আসতে পারে?
- এই যন্ত্র কি নির্ভুল ভাবে অক্সিজেন স্যাচুরেশন সত্যি মাপতে পারে?
- এবার দেখে নিন পালস অক্সিমিটার এর দাম সহ কতকগুলি উদাহরণ
পাল্স অক্সিমিটার কি ?
পাল্স অক্সিমিটার হল চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত এমন একটি যন্ত্র যা আমাদের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা শনাক্ত করতে সাহায্য করে।
আমাদের শরীরে কোনো ছুঁচ না ফুটিয়ে, শরীরকে বিন্দুমাত্র কষ্ট না দিয়েই এই যন্ত্র আমাদের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বলে দেয়। আর এই শনাক্তকরণ পদ্ধতিকেই বলা হয় পাল্স অক্সিমেট্রি।
চিকিৎসার পরিভাষাতে রক্তে এই অক্সিজেনের মাত্রাকে বলা হয় অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল।
এই যন্ত্রের সাহায্যে আমরা দেখতে পারি যে, আমাদের হার্ট যে রক্ত সারাক্ষণ পাম্প করে শরীরের বিভিন্ন অংশে পাঠাচ্ছে তাতে কতটা অক্সিজেন আছে।
অর্থাৎ আমাদের হৃৎপিণ্ড থেকে বহুদুরে হাতে ও পায়ে কি পরিমান অক্সিজেন সমন্বিত রক্ত পৌছাচ্ছে, তা মাপা যায় এই যন্ত্রে ।
পাল্স অক্সিমিটার কেমন দেখতে এবং তা কিভাবে কাজ করে ?
এটা ক্লিপ বা ছোট ক্ল্যাম্পের মত দেখতে একটা ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র যা হাতের আঙ্গুলে, পায়ের আঙ্গুলে বা কানের লতিতে ক্লিপের মত লাগিয়ে দিলেই হবে। (হাতের আঙ্গুল বিশেষত তর্জনী বা মধ্যমা ব্যবহার করাই বাঞ্ছনীয়)।
এই মেসিনটি থেকে একটা ছোট আলো বের হয় যা আঙ্গুলের মধ্যে থাকা রক্তের অক্সিজেন মাপতে পারে সাথে পালস রেট ও মাপে।
অক্সিমিটার সাধারণত ‘ফোটোপ্লেসিথমোগ্রাফি’ বা পিপিজি প্রযুক্তির সাহায্যে কাজ করে, এই পদ্ধতিতে আঙুলের ভিতর দিয়ে আলো যায়।
সেই আলোর প্রতিফলনের ফলেই রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ও পালসের গতি পাওয়া যায় তাই পুরো পদ্ধতিতে কোন কষ্ট নেই।
এই যন্ত্রের দুদিকে আপনি দুটি রিডিং দেখতে পাবেন একদিকে দেখা যাবে SpO2 রিডিং যার মাধ্যমে রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ জানা যাবে আর অন্যদিকে দেখা যাবে পালস রিডিং যার মাধ্যমে পালস রেট জানতে পারবেন।
স্বাভাবিক সুস্থ মানুষের রক্তে অক্সিজেন মাত্রা সর্বনিম্ন ৯৫% শতাংশ থাকে। ৯০% এর নিচে এই অক্সিজেন লেভেল নামলে রোগীকে এমার্জেন্সিতে ভরতি করা আবশ্যিক, ৯২% এর নিচে নামলেই হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
পালস অক্সিমিটার কারা ব্যবহার করে ? কাদের জন্য উপযুক্ত ?
কোভিড মহামারির আগে এই যন্ত্র বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হত ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট অর্থাৎ এমারজেন্সিতে। ফুসফুস বিষেজ্ঞরাও নিজেদের চেম্বারে এই যন্ত্র ব্যবহার করতেন।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সিওপিডি, অ্যাস্থমা, নিউমোনিয়া, হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসাতে ব্যবহার করা হত।
কিন্তু এখন এই কোভিড মহামারীতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ফুসফুস। কোভিড আক্রান্তদের শরীরে হঠাৎ করে অক্সিজেন কমে যাছে আর শ্বাসকষ্ট শুরু হচ্ছে।
তাই ডাক্তার বাবুরা সবাইকে বলছেন যে অক্সিমিটার কিনে বাড়িতে রাখতে এবং রোজই একবার করে চেক করে নিতে।
যারা কোভিড-১৯ আক্রান্ত তাদের জন্য অক্সিমিটার প্রথম ও প্রধান আবশ্যিক উপকরণ। তাদের ক্ষেত্রে দিনে তিনবার করে চেক করা দরকার যাতে সংক্ৰমণ বাড়ার আগেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
এই যন্ত্রই বলে দেবে রোগী কে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন আছে কিনা।
আর যাদের কোভিড হয়নি কিন্তু কাজে বেরতে হচ্ছে তারাও বাড়িতে রাখলে উপকারই হবে নাহলে হঠাৎ করে আক্রান্ত হলে তখন তাদের অজান্তেই রোগের বাড়াবাড়ি যাতে হয়ে না যায় তার জন্যই এই প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ আজকের দিনে আবশ্যিক।
পালস অক্সিমিটার খারাপ কিনা বুঝবেন কি করে?
আঙুলের পরিবর্তে কোনো জড় বস্তু যেমন চামচ বা কলম ঢুকিয়ে পালস অক্সিমিটারটি অন করে দিন যদি তাতেও কোনো রিডিং দেখায় তাহলে বুঝতে হবে পালস অক্সিমিটারটি খারাপ বা নকল।
পালস অক্সিমিটার ব্যবহারের নিয়ম বা সঠিক পদ্ধতি কি?
১. যে আঙুলে (তর্জনী বা মধ্যমা) লাগাবেন তাতে নেলপালিশ বা মেহেন্দি এরম কিছু যেন না থাকে।
২. হাতের তাপমাত্রা যেন স্বাভাবিক থাকে, যদি হাত খুব ঠান্ডা মনে হয় তাহলে হাতে হাত ঘষে একটু গরম করে নিন।
৩. পালস অক্সিমিটার দিয়ে রক্তে অক্সিজেনের পরিমাপ নেওয়ার আগে অন্তত মিনিট পাঁচেক বিশ্রাম নিন, আঙ্গুল ঢোকানোর আগে শরীর যেন স্থির ও রিল্যাক্সড থাকে।
৪. তর্জনী বা মধ্যমা পালস অক্সিমিটার এর ভিতরে দিয়ে মেশিনটি অন করুন।
৫. যতক্ষন না রিডিং স্থির হচ্ছে ততক্ষণ শান্তভাবে অপেক্ষা করুন, হাত নড়াবেন না।
৬. যে রিডিংটা অন্তত পাঁচ সেকেন্ড ধরে একই থাকবে সেটা লিখে রাখুন ওটাই আপনার শরীরের ওই সময়ে অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল।
কোন কোন কারণে পালস অক্সিমিটার রিডিং ভুল আসতে পারে?
১. যদি আঙুলে নেলপালিশ, মেহেন্দি বা হেনা জাতীয় কিছু থাকে।
২. যদি আপনার শরীর স্থির না থাকে বা আঙ্গুল কাঁপতে থাকে।
৩. ঘুমন্ত অবস্থায় ব্যবহার করলে।
৪. অনেক সময় এমনিই রিডিং ভুল বা খুব কম এলে সেক্ষেত্রে একটু হাঁটাচলা করে কয়েক মিনিট পরে আবার রিডিং নিন।
এই যন্ত্র কি নির্ভুল ভাবে অক্সিজেন স্যাচুরেশন সত্যি মাপতে পারে?
এই প্রশ্ন আমাদের সবার মনে ঘুরছে,তাই এই সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখা গেল যে হ্যাঁ আমাদের কাছে এর থেকে কোন সহজ পদ্ধতি নেই।
চিকিৎসাবিদদের মতে অক্সিমিটার এর ভুল ভ্রান্তি ২ ঘর হতে পারে।
অর্থাৎ যদি কারোর অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯০% আসে তাহলে ধরতে হবে ৮৮-৯২ এই সীমার মধ্যে অক্সিজেন লেভেল শরীরে আছে ।
নেলপালিস, শরীরের তাপমাত্রা অনেক সময় রিডিং এ সমস্যা করে।
তাই নিজের শারীরিক অবস্থা মাপার, এর চেয়ে সহজ উপায় নেই যা সাধারন মানুষের সাধ্যের মধ্যে। তাই অক্সিজেন মজুত করা কালোবাজারিদের সুবিধা না দিয়ে নিজের শরীর পর্যবেক্ষণে রাখুন, সচেতন থাকুন, সুরক্ষিত থাকুন।
এবার দেখে নিন পালস অক্সিমিটার এর দাম সহ কতকগুলি উদাহরণ
১. আঙুলে লাগানো পালস অক্সিমিটার।
২. বাড়িতে বা ক্লিনিকে যে কোনো জায়গায় ব্যবহারযোগ্য, ৩০ কেজির উপর বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ব্যবহারযোগ্য।
sahayog পালস অক্সিমিটার
১. আঙুলে লাগানো পালস অক্সিমিটার। অক্সিজেন স্যাচুরেশন মাপার সাথে পারফিউশন ইনডেক্স, পালস স্ট্রেন্থ, পালস রেটও সঠিকভাবে মাপতে পারে।
২. ১০ সেকেন্ড পর যন্ত্রটি নিজেই বন্ধ হয়ে যাবার প্রযুক্তি দেওয়া আছে।
১ বছরের ওয়ারেন্টি
১. আঙুলে লাগানো পালস অক্সিমিটার। তিন AAA ব্যাটারি বিশিষ্ট FDA স্বীকৃত পাল্স অক্সিমিটার।
২.পারফিউশন ইনডেক্স, পালস রেট, পালস স্ট্রেন্থ, অক্সিজেন স্যাচুরেশন মাপতে পারে।
১. প্রফেশনাল পালস অক্সিমিটার।
২. .পারফিউশন ইনডেক্স ,পালস রেট, অক্সিজেন স্যাচুরেশন মাপতে পারে।
১. পারফিউশন ইনডেক্স, পালস রেট, অক্সিজেন স্যাচুরেশন মাপতে পারে। FDA দ্বারা স্বীকৃত।
২. বাড়ির জন্য হোক বা ক্লিনিকের জন্য যথেষ্ট ভালো মানের অক্সিমিটার।
- ভেপার মেশিন কি ? তার ব্যবহার ও গুরুত্ব
- মাস্কের প্রয়োজনীয়তা কি ? কি ধরণের মাস্ক কার দরকার ?
- সারফেস ডিসইনফেকট্যান্ট কি ? বহুল বিক্রিত ১২ টি সারফেস ডিসইনফেকট্যান্ট
- করোনা থেকে বাঁচার ঘরোয়া উপায়গুলি কি কি? দৈনিক কোন কাজগুলি করবেন?