আজকের এই নিবন্ধে আলোচনা করা হবে সেইসব পলিটেকনিক কোর্সগুলি নিয়ে যেগুলি এখনো পর্যন্ত খুব বেশি প্রচলিত নয়।
২০১০-১১ সালের পর থেকে কারিগরি শিক্ষায় গতি আনার জন্য বেশ কিছু সদর্থক পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয় যেখানে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন স্ট্রিমের উদ্ভাবন শুরু হয়।
২০১৫-১৬ সালের পর থেকে পলিটেকনিক কলেজ সংখ্যা ও যথেষ্ট বাড়তে থাকে এবং বিভিন্ন নতুন কলেজে নতুন নতুন স্ট্রিম পড়ানো চালু হয়। যদিও এই প্রতিটি স্ট্রিমের গ্রহণযোগ্যতা কতটা তা মাপার মতো সময়ের দূরত্বে এখনো আমরা পৌছাইনি।
তাও আমরা সেইসব স্ট্রিম গুলি কেই গ্রহণ যোগ্য বলবো যদি তারা বর্তমান বাজারের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ কর্মী উৎপাদন করতে সক্ষম হয় ও যেসব পড়ুয়ারা এই সব প্রচলিত স্ট্রিমগুলি নিয়ে পড়ছে তাদের জীবন ধারণের জন্য কাজের বাজারের সন্ধান করে দিতে পারে।
এই নিবন্ধটি লেখার সময় প্রতিটি কোর্স সম্পর্কে পড়াশোনা করাকালীন দেখা গেল যে নতুন এই পলিটেকনিক কোর্সগুলির মধ্যে কিছু কোর্স বিভিন্ন কলেজে চললেও, তা সত্যি পড়ুয়াদের কতটা ক্যাম্পাসিং এর মাধ্যমে চাকরি দিতে সক্ষম হয়েছে তার কোনো তথ্য কোনো কলেজের ওয়েবসাইটে নেই।
তবে একথা ঠিক যে এই প্রতিটি পলিটেকনিক কোর্স করার পর বিটেক করার অপশন ও সবার কাছে খোলা থাকে, আর বিটেক করে নিলে কাজের ক্ষেত্র সত্যি বড়ো হয়, কিন্তু আমাদের এই পোস্টের বিষয় যে পলিটেকনিক কোর্স গুলি করে সত্যি কি কি চাকরি পাওয়া সম্ভব তার হদিশ দেওয়া।
Attention :- তাই যদি এই নিবন্ধটি এমন কেউ পড়েন যার কাছে এই স্বল্প প্রচলিত কোর্স গুলি যেসব কলেজ করায় তাদের ক্যাম্পাসিং বা বাজারের কাজের সুযোগ সুবিধা সংক্রান্ত কোনো তথ্য থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্স এ জানান যাতে পড়ুয়ারা উপকৃত হয়।
এই কোর্সগুলি কিভাবে পড়া যায় ?
JEXPO পরীক্ষা দিয়ে।
- লেদার গুডস টেকনোলজি /Leather Goods Technology –
- ফুটওয়্যার টেকনোলজি | Footware Technolgy –
- সাইবার ফরেনসিক ও ইনফরমেশন সিকিউরিটি | Cyber Forensics & Information Security-
- মাল্টি মিডিয়া টেকনোলজি/ Multi Media Technology-
- জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম ও গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম । Geographic Information System & Global Positioning System-
- রিনিউয়েবল এনার্জি /পুনর্ব্যবহার যোগ্য শক্তি । Renewable Energy –
- কোথায় পড়ানো হবে ?
- প্যাকেজিং টেকনোলজি – Packaging Technology-
- ফটোগ্রাফি | Photography –
লেদার গুডস টেকনোলজি /Leather Goods Technology –
জীবজন্তুর চামড়াকে প্রক্রিয়াকরণ ও প্রক্রিয়াজাত চামড়া দিয়ে বিভিন্ন জিনিসপত্র ( বেল্ট, ব্যাগ, কোর্ট, জুতো, লাগেজ, জ্যাকেট, গ্লাভ্স , মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্টস ইত্যাদি ) বানানো শেখানো হয়।
মার্কেট হিসেবে ভালো কারণ খুব কম লোক পড়ে এবং ফ্যাশন ও টেক্সটাইলে দুনিয়াতে এই পেশার বহুল ব্যবহার আছে তাই আকর্ষণীয় স্যালারি ও পাওয়া খুব অসম্ভব নয়।
কোন কলেজে পড়ানো হয় ?
সেন্ট্রাল footware টেকনোলজি ট্রেনিং সেন্টার শুধুমাত্র।
কোর্স ফী – প্রায় ১৯০০ টাকার মতন
আসন সংখ্যা – ৬০
কালিপুর, বজবজ, P.O.-P.N. Pur, জেলা- দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, পিন -৭০০১৩৮।
ফোন নং – 033-24820453
ইমেইল আইডি – cftcbudgebudge@gmail.com
কোন কোন ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ পাওয়া যায় ?
ব্যাগ, পোশাক, অ্যাকসেসরি, জুতো, বেল্ট প্রভৃতি ম্যানুফ্যাকচারিং ও ডিজাইনিং কোম্পানি গুলিতে কাজের সুযোগ পাওয়া যায়।
ফুটওয়্যার টেকনোলজি | Footware Technolgy –
এই যে অনলাইন কেনাকাটা যেদিন থেকে ঝড়ের গতি পেয়েছে সেদিন থেকে আমরা আমাদের চারপাশে যে এতো জুতো বিক্রি হতে দেখছি সেই জুতো বানানোর প্রক্রিয়া পদ্ধতি হলো Footwear Technology . .
কোন কলেজে পড়ানো হয় ?
সেন্ট্রাল footware টেকনোলজি ট্রেনিং সেন্টার শুধুমাত্র ( দক্ষিণ ২৪ পরগনা)
কোর্স ফী – প্রায় ১৯০০ টাকার মতন
আসন – ৬০
https://en.wikipedia.org/wiki/Central_Footwear_Training_Center
কালিপুর , বজবজ, P.O.-P.N. Pur, জেলা- দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, পিন -৭০০১৩৮।
ফোন নং – 033-24820453
ইমেইল আইডি – cftcbudgebudge@gmail.com
সাইবার ফরেনসিক ও ইনফরমেশন সিকিউরিটি | Cyber Forensics & Information Security-
বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অত্যাবশকীয় পণ্য হয়ে উঠেছে। ব্যাঙ্কিং ট্রানসাকশান থেকে ডেলিভারি, কোথাও যাবার জন্য অনলাইন ট্যাক্সি ডাকা থেকে সরকারি বৃত্তি, ভাতা বা প্রকল্পের টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এসে ঢোকা, অনলাইন বিজনেস পরিচালনা করা, বাড়িতে থেকেই স্কুল, কলেজ, অফিস মিটিং করা সব ই সম্ভব হয়েছে কারণ ইন্টারনেট সহজ লভ্য ও সার্বজনীন হয়ে উঠেছে।
যেহেতু আস্তে আস্তে সারা পৃথিবীর মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে তাই তাদের সমস্ত ব্যক্তিগত তথ্য ও আর ব্যক্তিগত থাকছে না, আর এখানেই ফাঁদ পাতছে বিপদ। ডাকাতরা এখন আর বাড়িতে তালা ভেঙে চুরি করছে না, তারা আপনার নিজের হাতে থাকা ফোন বা কম্পিউটাররের কোড, পাসওয়ার্ড হ্যাক করে আপনার সমস্ত তথ্য হাতিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট কে ফাঁকা করে দিতে ওৎ পেতে আছে, বা ব্যক্তিগত তথ্য কে কাজে লাগিয়ে ব্ল্যাক মেইল ও প্রাণহানির ঘটনাও আর খুব অস্বাভাবিক নেই।
আর এখানেই দরকার সাইবার নিরাপত্তার। তাই এই স্ট্রিমের প্রবর্তন করা হয়েছে যেখানে ইনফরমেশন সিস্টেম,ইনফরমেশন সিকিউরিটি, সিকিউরিটি থ্রেটস ও রিস্ক, ডাটা সিকিউরিটি ও ব্যাকআপ, ডিজিটাল ফরেনসিক এর গুরুত্ব, কম্পিউটার ও মোবাইল ফরেনসিক এবং সাইবার আইন সম্পর্কে বিশদে পড়ানো হয়।
স্বয়াম পোর্টাল এর এই লিংক পেজ টি পড়তে পারেন –
https://onlinecourses.swayam2.ac.in/cec21_ge10/preview
কোন কলেজে পড়ানো হয় ?
বেহালা গভর্নমেন্ট পলিটেকনিক –
খরচ – ১৯০০ টাকা
আসন – ৬০
ঠিকানা – ৭৫৬, উপেন্দ্র ব্যানার্জী রোড, পর্ণশ্রী , কলকাতা- ৭০০০৬০
ফোন নং – 03324077122
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট – https://polytechnic.wbtetsd.gov.in/behalagovpoly
মাল্টি মিডিয়া টেকনোলজি/ Multi Media Technology-
মাল্টিমিডিয়া হলো কম্পিউটারাইসড সেই পদ্ধতি যেখানে ইনফরমেশন/ তথ্যাবলীকে টেক্সট, অডিও, ভিডিও, গ্রাফিক্স, অ্যানিমেশনের মাধ্যমে এমন আকর্ষণীয় এবং ব্যবহারকারীদের জন্য আদানপ্রদানের সুবিধাযুক্ত করা হয় যে সেই কন্টেন্টের গ্রহণযোগ্যতা কাস্টমারের কাছে বেড়ে যায়।
ধরা যাক তোমাদের বার বার ছোট থেকে পাঠ্যবই থেকে সিনেমা শুরুর আগে সর্বত্রই শেখানো হচ্ছে যে রাস্তায় থুতু না ফেলতে, সিগারেট না খেতে কারণ তার থেকে নানা রোগ সংক্রমণ বাড়ে, কিন্তু কিছু ছেলেমেয়ে /প্রাপ্ত বয়স্ক লোক আছে যাদের মাথায় এতো সব সহজে ঢোকেনা (কারণ তারা তা চায় ও না যেহেতু তারা আগামীর স্বাস্থ্য সংকটটাকে নিজের চোখে দেখতে পাচ্ছেনা তাই ভয় ও পাচ্ছেনা ) তাই বহু সচেতনতা প্রোগ্রাম এই ভাবে মাঠে মারা যায়, কারণ সাদা বই এর পাতায় কালো হরফে লেখা “ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ” শব্দবন্ধটি ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের মনে ভয় তৈরী করতে সক্ষম নয়, বাক্যটি নেহাত ই জ্ঞান দেবার মতো শোনায়।
আর এখানেই মাল্টিমিডিয়ার সার্থকতা। অরিজিনাল রোগাক্রান্তদের দুর্দশার ভিডিও, অডিও, গ্রাফিক্স, অ্যানিমেশন সমস্ত ব্যবহার করে দর্শকদের সেই ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন করায় যা সে যদি জ্ঞানের শব্দ বন্ধটি পালন না করে তার ক্ষেত্রেও হতে পারে।
আর সত্যি ভারতে তরুণ প্রজন্মের ধূমপানের প্রতি আসক্তি কমানো গেছে এই পদ্ধতি অবলম্বন করে।
এছাড়াও আমরা টিভি তে/ মোবাইলে/ রাস্তার হোর্ডিং এ যে বিজ্ঞাপন দেখি তা চলমান ই হোক বা ষ্টীল ছবি বা ইমেজ, তা আমাদের মস্তিষ্কে বেশিক্ষন ও দৃঢ়ভাবে তার প্রভাব বিস্তার করে বলেই সর্বত্র এতো বিজ্ঞাপনের রমরমা যাতে আপনি আমি প্রোডাক্ট গুলি কিনতে আগ্রহী হই।
আর মানুষের মস্তিষ্কের কাছে যে যত আকর্ষণীয় করে বিজ্ঞাপন করতে পারবে তার ব্যাবসা ততই সফল হবে। তাই মাল্টিমিডিয়া টেকনোলজির গ্রহণযোগ্যতা যে কোনো ব্রডকাস্টিং মাধ্যমেই যথেষ্ট , এখন যে আমরা ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কথা সারাক্ষন বলি তাও কিন্তু মাল্টিমিডিয়া টেকনোলজিরই একটি রূপ।
কোথায় পড়ানো হয় ?
রিজিওনাল ইন্সটিটিউট অফ প্রিন্টিং টেকনোলজি তে পড়ানো হয়।
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট-
http://polytechnic.wbtetsd.gov.in/riptkolkata
কাজের সুযোগ কেমন ?
মাল্টিমিডিয়ার ডিপ্লোমা করে যে যে ক্ষেত্রে কাজ করা যাবে তা হল- ওয়েব ডিজাইনিং , অ্যাডভার্টাইসিং গ্রাফিক্স, কম্পিউটার গেম ডিজাইন, অ্যানিমেশন ও নিউ মিডিয়া, পাবলিসিং হাউস , ফিল্ম ভিডিও কনফারেন্সিং, ইনস্টিটিউশন, প্রিন্ট নিউস মিডিয়া, কার্টুন প্রোডাকশন প্রভৃতি।
মূলত মিডিয়া ডেভেলপাররা ফ্ল্যাশ ডেভেলপার, নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার, পাবলিশার , গ্রাফিক্স আর্টিস্ট, সাউন্ড এক্সপার্ট, অ্যানিমেটর, এডিটর, 3D গ্রাফিক্স ডিজাইনার প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতে পারবে।
যে যে কোম্পানি গুলি মাল্টিমিডিয়া ডিপ্লোমা দের নিয়োগ করে তা হল –
Viacom , নেটফ্লিক্স , CBS SONY , walt disney ইত্যাদি আরো বিভিন্ন কোম্পানি।কিন্তু এই কোম্পানি গুলি সত্যি কত টা ডিপ্লোমা কর্মী নিয়োগ করে তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ আছে। কিন্তু আবার ও বলছি যে কোনো সেক্টরে নিজের স্কিল বাড়িয়ে কাজের সুযোগ ও বাড়িয়ে নেওয়া যায়। কারণ ডিগ্রির চেয়ে দক্ষত্ৰ চাহিদাই বেশি।
জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম ও গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম । Geographic Information System & Global Positioning System-
জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম & গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং কি ?
জিপিএস – এমন একটি পরিকাঠামো ব্যবস্থা যেখানে আকাশে ঘুরে বেড়ানো আর্টিফিশিয়াল স্যাটেলাইট রেডিও সিগন্যাল পাঠায় পৃথিবী পৃষ্ঠে বসানো কিছু জিপিএস রিসিভারে।
এবার এই রিসিভারগুলি ক্যালকুলেট বা গণনা করে যে সেই মুহূর্তে পৃথিবী পৃষ্ঠে ওর নিজের লোকেশন বা পজিশন কোথায়। এবার সেই রিসিভার গুলো যখন নিজেদের অবস্থান বদলায় তখন স্যাটেলাইটে থেকে আসা সিগন্যাল সেই পসিশনের রিসিভারে ধরা দেয় ও সেই অনুযায়ী আমাদের গাড়ির সময় এর পার্থক্যে গাড়ির অবস্থানের ডিস্ট্যান্সের পার্থক্য হিসেব করে আমাদেরই বলে দেয় যে আমাদের গাড়ির স্পিড কত।
অর্থাৎ জিপিএস হলো একটি measuring টুল বা রেডিও নেভিগেশন সিস্টেম যা তৈরী হয়েছে কিছু লো আর্থ অরবিট স্যাটেলাইট, কিছু গ্রাউন্ড স্টেশন, আর আমাদের মতো কোটি কোটি ব্যবহারকারীদের সম্মেলনে ।
জিআইএস – এটি হল এমন বেশ কয়েকটি তথ্যের সমাহার যেখানে একটি নির্দিষ্ট জায়গার বিভিন্ন তথ্য যা বিভিন্ন পদ্ধতিতে পাওয়া গেছে তার একত্রীকরণ (integration), সংরক্ষণ, Storing, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ (analysis) করে তা গ্রাফিক্স ও গ্রাফের মাধ্যমে প্রকাশ করা।
যেমন উদাহরণ ১ হিসেবে ধরা যাক – ভারত একটি বিশাল দেশ কিন্তু ম্যাপ বই তে গড় বার্ষিক বৃষ্টির তারতম্যের ভিত্তিতে এই বিশাল জায়গা টিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে এবং এই পার্থক্য বোঝানোর জন্য বিভিন্ন রং ও ব্যবহার করা হয়।
তাহলে ভারতের অ্যাভারেজ রেনফল এর বিভিন্ন রং এর সাহায্যে ডেমোগ্রাফিক ম্যাপ এর এই যে প্রকাশ হলো তা কিন্তু অনেক গুলি পূর্ববর্তী প্রক্রিয়ার ফলাফল , যেমন সমস্ত জায়গায় বৃষ্টিপাত মাপার যন্ত্র বসানো, তার সঠিক রক্ষনাবেক্ষন, প্রতিবার বৃষ্টি হবার পর কত টা বৃষ্টি হচ্ছে তা ক্রমাগত মাপা, তারপর যন্ত্রের আবার পুনর্স্থাপন, এবং অবশেষে হিসেব নিকেশ করা, এতো গেলো শুধুমাত্র একটা জায়গার রেনফল মাপা।
এরকমই সারা ভারতের বিভিন্ন জায়গায় একই পদ্ধতিতে বৃষ্টিপাত মেপে তার পার্থক্য বার করা, স্ট্যাটিস্টিক্স অনুযায়ী তার হিসেবনিকেশ ও পরে তার গ্রাফিক্যাল রিপ্রেসেন্টেশনের পুরো পদ্ধতি হলো GIS ইনফরমেশন সিস্টেম এর একটি উদাহরণ।
উদাহরণ ২- US এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হলে দেখা যায়, প্রতিটা কাগজে আমেরিকার ৫০ টি স্টেটের মধ্যে কোন স্টেট কোন পার্টিকে সমর্থন করে তা ম্যাপ এর মাধ্যমে বোঝায় , এটাও GIS এর একটি উদাহরণ।
GIS এ যে টেকনোলজি গুলি একত্রে কাজ করে তা হলো-
সার্ভে, ফিল্ড ডাটা সংগ্রহ
রিমোট সেন্সিং
কার্টোগ্রাফী , ম্যাপিং
GPS
কম্পিউটার
RDMS
ইনফরমেশন টেককনোলোজি
কমুনিকেশন টেকনোলজি
কোন কোন গভর্নমেন্ট কলেজে পড়ানো হয় ?
এই পলিটেকনিক কোর্স টি শুধুমাত্র ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্ভে ইনস্টিটিউট,( ব্যান্ডেল ,হুগলী ) তে করানো হয়।
এই কলেজটি পশ্চিমবঙ্গের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য খুব ই নামি একটি প্রতিষ্ঠান। এখানে যে কোর্স গুলি করানো হয় তা হল – সার্ভে ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, GIS ও GPS .
বছর ৫ আগে এই ইনস্টিটিউটে GIS-GPS কোর্সটি যুক্ত করা হয় কারণ প্রযুক্তিগত পড়াশোনা সবসময় আগামীর মানবসম্পদ প্রত্যক্ষ ভাবে তৈরী করার জন্যই পড়ানো হয়।
যেখানে আমরা সারাদিন বেশিরভাগ সময় ডিজিটাল মাধ্যমে কাটাই সেখানে এই ধরণের আধুনিক পড়াশোনার করে তার সুফল যাতে ছাত্রছাত্রীরা পেতে পারে তাই সেই সম্ভাবনা কে কাজে লাগাবার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে এই কোর্স চালু করে।
এখানে পলিটেকনিকের সাথে সাথে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ও করানো হয় GIS-GPS কোর্সের।
তবে শুধু মাত্র ডিপ্লোমার কোর্স করলে হবে না সাথে শিখে নিতে হবে যুগোপযোগী বিভিন্ন সফটওয়্যার যা তোমার কাজের সঙ্গে কার্যকরী ভাবে সংযুক্ত। সেরকম ই কিছু সফটওয়্যার ই হল – Hand on ArcGIS, QGIS , AutoCAD, ERDAS softwares যেগুলি শিখে নিতে হবে।
কোর্স ফি – প্রায় ১৯০০ টাকা ( ৩ বছরের মোট খরচ )
আসন সংখ্যা -৩০ টি
http://www.wbsibandel.org
পড়ার পর চাকরির সুযোগ কেমন ?
এটি এমন একটি কেরিয়ার যেখানে ভূগোল ও তথ্য প্রযুক্তি দুই এরই জ্ঞান থাকা দরকার ও প্রাইভেট কোম্পানি র মধ্যে কিছু বড়ো কোম্পানি তে এই সংক্রান্ত কাজের কিন্তু উন্নতি যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ ব্যাপার , তবে GIS ডিগ্রি হোল্ডার হিসেবে বেশ কিছু সরকারি সংস্থা তেওঁ কাজ পাওয়া যেতে পারে যেমন ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট।
এই সংক্রান্ত বিভিন্ন আধুনিক টেকনোলজি সম্পর্কে নিজেকে ওয়াকিবহালও রাখতে হবে এবং এমন কোনো সংস্থার সাথে যুক্ত হতে হবে যেখানে আপনি অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বাড়াতে হবে।
রিনিউয়েবল এনার্জি /পুনর্ব্যবহার যোগ্য শক্তি । Renewable Energy –
Renewable Energy আমাদের কাছে প্রচলিত ‘অচিরাচরিত শক্তি’ নামে।
অচিরাচরিত শক্তি হলো এইসব প্রাকৃতিক শক্তি যা আমরা যতই ব্যবহার করিনা কেন তার ক্ষয় হবেনা।
চিরাচরিত শক্তির সঙ্গে অচিরাচরিত শক্তির পার্থক্য হলো চিরাচরিত শক্তি আমরা যে সম্পদ ব্যবহার করে পাই সেইসব সম্পদ নির্দিষ্ট পরিমানে সঞ্চিত আছে এবং ক্রমাগত যথেচ্ছাচার ব্যবহারের ফলে ক্রমাগত নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, যেমন আমাদের বাড়িতে যে আলো, পাখা চলছে তার বেশির ভাগ টাই থার্মাল পাওয়ার প্লান্ট থেকে বিদ্যুৎ আসছে বলেই আর এই থার্মাল পাওয়ার প্লান্টে শক্তির যোগান দিচ্ছে কয়লা যা লক্ষ কোটি বছর ধরে মাটির তলায় সঞ্চিত হয়েছে।
কিন্তু সঞ্চিত কয়লার পরিমান নির্দিষ্ট, আমরা কয়লা কম পড়লেই পৃথিবীর কয়লা খনি কে বলতে পারিনা যে আমাকে আরো বেশি করে কয়লা দাও, কয়লা না থাকলে আমরা খনন করেও কিছু পাবো না।
তার সাথে রয়েছে দূষণের প্রকোপ।এই সমস্ত জ্বালানী হিসেবে যেগুলি ব্যবহার হয় সেগুলি কার্বনেরই রূপভেদ, তাই যত এগুলি পুড়িয়ে আমরা শক্তি তৈরী করবো বাতাসে কার্বন ডাই অক্সিডের পরিমান বাড়বে আর আমাদের জন্য নিঃশ্বাস নেওয়া প্রাণঘাতী হয়ে উঠবে, আর এখানেই সার্থকতা অচিরাচরিত শক্তির যেগুলি পুনর্ব্যবহার করা যায়; যেমন – বায়ুশক্তি, সৌরশক্তি, জলশক্তি সহ বিভিন্ন অচিরাচরিত শক্তি।
আর যেহেতু আমরা ট্রপিক্যাল দেশে থাকি যেখানে প্রায় ৮ মাস যথেষ্ট তেজি সূর্যের আলো পাই তাই সৌরশক্তি বিকল্প শক্তি হিসেবে উঠে আসছে খুব শীঘ্রই ।
সত্যি আজকের যুগে যা একান্ত দরকার ও আগামী দিনের কার্যকরী লেখাপড়ার বিষয় হলো রিনিউএবল এনার্জি।
ডিপ্লোমা পড়ে কত টা কাজের সুযোগ পাওয়া যায় ?
সত্যি কাজের সুযোগ ভালো কারণ এই বিষয়ে এখনো দক্ষ মানবসম্পদের যথেষ্ট অভাব আর যত দিন যাচ্ছে জলবায়ুর পরিবর্তন সারা পৃথিবীকে মারাত্মক পরিণতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে, করোনা মানুষের শ্বাসতন্ত্রের যত না ক্ষতি করেছে তার থেকে কলকারখানা, গাড়ি থেকে দূষিত বায়ু আরো বেশি মানুষকে ও জীবজন্তু কে তিলে তিলে মারণ রোগের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাই এই সেক্টরটিও যথেষ্ট ভালো কেরিয়ার এর সুযোগ এনে দিতে পারে।
তা সত্ত্বেও আমরা এখনো কোর সাবজেক্টের পিছনে সবাই ছুটছি অথচ ভুলে যাই যে সেখানে তো প্রথম থেকেই অনেক ছেলেমেয়ে প্রতিযোগিতা করছে তাই সাফল্যের জন্য সংঘর্ষ আরো বেশি করতে হবে।
ভেবে দেখো আমাদের আশেপাশে আমরা কাউকে কি দেখছি যে এটা নিয়ে পড়াশোনা করছে ? এখন অবধি হাতে গোনা ছেলে মেয়ে এই নিয়ে ডিপ্লোমা করছে তাই সত্যি কাজের সুযোগ আছে। এই রকম কিছু ক্ষেত্র হলো – সোলার প্ল্যান্ট, উইন্ড প্ল্যান্ট ও হাইড্রো ইলেকট্রিক প্ল্যান্ট প্রভৃতি ।
তরুণ সমাজ কে উদ্বুদ্ধ করতে হবে যাতে তারা আগামী দিনে সুস্থ নিঃশ্বাস নেবার যোগ্য বাতাস উপহার স্বরূপ প্রদান করে সারাপৃথিবী কে এক নতুন আলোর দিশা দেখাতে পারবে।
কোথায় পড়ানো হবে ?
ক্যানিং গভর্নমেন্ট পলিটেকনিক , দক্ষিণ ২৪ পরগনা । Canning Government Polytechnic, South 24 Parganas
Village:- Narayanpur, P.O:- Narayanpur, Ps:- Jibantala, Pin:- 743363 PIN-743363
ফোন নং -9830067006
আসন- ৬০, খরচ- ওয়েবসাইটে কোনো তথ্য দেওয়া নেই।
বসিরহাট গভর্নমেন্ট পলিটেকনিক । Basirhat Government Polytechnic, Basirhat
আসন- ৬০, খরচ -৪০০০ টাকা
Sir R.N.Mukherjee Road, P.O.- Bhyabla, P.S.-Basirhat, District-North 24 Parganas,West Bengal,Pin- 743422 PIN-743422
ফোন নং – 8336045142
প্যাকেজিং টেকনোলজি – Packaging Technology-
প্যাকেজিং টেকনোলজি হলো ইঞ্জিনিয়ারিং এর সেই বিভাগ যেখানে যেকোনো প্রোডাক্ট যা বিভিন্ন কারখানাতে বানানো হয় সেগুলি ক্রেতাদের কাছে সুরক্ষিত এবং অক্ষতভাবে পৌঁছে দেবার পদ্ধতির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
যেমন ধরা যাক ওষুধ থেকে খাদ্য সামগ্রী, ইনজেকশন-ভ্যাকসিন থেকে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সূক্ষাতিসূক্ষ যন্ত্রপাতি ও আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী প্রতি দিন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা স্থানান্তর করা হচ্ছে, আর এই স্থানান্তরকরন প্রক্রিয়াটি যাতে কোনো সমস্যা ছাড়া হতে পারে তার জন্য প্রতিটি পদার্থ কে তার প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী প্যাকিং করা হয় , আর এখানেই প্রয়োজন প্যাকেজিং টেকনোলজির।
এই যে ভারত এতো গম-ধান বিদেশে রপ্তানি করে, সেগুলি প্যাকেজিং করতে যে টেকনোলজি লাগবে সেই এক ই প্রযুক্তি দিয়ে কি ভ্যাকসিন প্যাকিং করে পাঠানো হবে ? তা তো নয়।
তাই প্যাকেজিং টেকনোলজি যথেষ্টই ভালো একটি কেরিয়ার হতে পারে।
কোথায় পড়ানো হয় ?
বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি । Birla Institute of Technology – ( govt )
আসন -৬০, খরচ – ২০০০ টাকার মতো
56, B T Road
Sinthi
Kolkata, 700050
Call – 03325576742
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট –
https://polytechnic.wbtetsd.gov.in/polytechnic/institute/about-us/course-offered/bitkolkata
মাথাভাঙা গভর্নমেন্ট পলিটেকনিক, কোচবিহার –
এই গভর্নমেন্ট পলিটেকনিক কলেজ টি ২০১৯-২০ সালে হয়েছে যাতে ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইসেশনের সঙ্গে তাল রেখে দক্ষ শ্রমিক নির্মাণ করা যায়।
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট –
https://polytechnic.wbtetsd.gov.in/polytechnic/institute/about-us/course-offered/mathabhangagovpoly
ঠিকানা – সিতাই মোড় , মাথাভাঙ্গা , কোচবিহার -৭৩৬১৪৬
E-mail: mtbgovtpoly@gmail.com
প্যাকেজিং টেকনোলজি সম্পর্কে আরো কোর্স জানতে তলার লিংকে ক্লিক করুন –
https://www.iip-in.com/education/courses-offered.aspx
ফটোগ্রাফি | Photography –
কোথায় পড়ানো হয় ?
রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ প্রিন্টিং টেকনোলজি (Regional Institute of Printing Technology ), যাদবপুর
আসন – ৪০ টা। খরচ – ১৯০০ টাকা
এর ক্যাম্পাসটি যাদবপুর ইউনিভার্সিটি এর কাছেই ।
ফটোগ্রাফির প্রফেশনাল কোর্স করার জন্য এখানে যথেষ্ট ভালো পরিকাঠামো পাবে যেমন; আধুনিক ও উন্নত বিভিন্ন ধরণের ক্যামেরা ব্যবহার শেখানো হয় যাতে সেগুলি ব্যবহার করে পড়ুয়ারা প্র্যাকটিকাল ফোটোগ্রাফি প্র্যাকটিস করার সুযোগ পায়, মাল্টিমিডিয়ার বিষয়ের ভালো করে শেখার জন্য উন্নত ডিজিটাল ল্যাবরেটরির সুযোগ রয়েছে।
এখানকার পড়াশোনা সত্যি খুব ভালো মানের, যদি কারোর ফোটোগ্রাফি নিয়ে প্যাশন থাকে আর সেটাকে সে পেশা হিসেবে বেছে নিতে চায় তাহলে অবশ্যই কোর্স টি করা উচিত কারণ এখানে ছাত্রছাত্রীদের তৈরী করা হয় যাতে তারা ইন্ডাস্ট্রি রেডি হতে পারে।
থাকার জন্য হোস্টেল ও পাওয়া যাবে।
এবার আসা যাক কাজের সুযোগ কেমন ?
ফোটোগ্রাফি কোনো বাঁধাধরা একটি মাত্র জায়গায় আবদ্ধ নয়। ফটোগ্রাফির বিভিন্ন ফিল্ড বর্তমান।
কাজের সুযোগ ও যথেষ্ট ভালো। মাল্টিন্যাশনাল প্রিন্টিং কোম্পানি যেমন hp , epson প্রভৃতি কোম্পানি তে কাজের সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও internship এর সুযোগ পাওয়া যাবে। ফটোগ্রাফির বেশ কিছু ফিল্ড হল- ফ্যাশন ফোটোগ্রাফি, নিউজ ফোটোগ্রাফি, স্পোর্টস ফোটোগ্রাফি, ওয়াইল্ড লাইফ ফোটোগ্রাফি, ট্র্যাভেল ফোটোগ্রাফি, প্রোডাক্ট ফোটোগ্রাফি, ফটো জার্নালিস্ট , ওয়েডিং ফোটোগ্রাফি ইত্যাদি।
আর শুধু ষ্টীল ফটোগ্রাফার নয়; গ্রাফিক্স ডিজাইনার, কনটেন্ট ক্রিয়েটর, ভিডিও এডিটর হয়ে বিভিন্ন অ্যাডভার্টাইসিং কোম্পানি, প্রোডাক্শন হাউসেও কাজের সুযোগ রয়েছে।
যদি সত্যি ফোটোগ্রাফির প্রতি তোমার প্যাশন থাকে আর আন্তর্জাতিক বাজারে তোমার ছবির কিরকম মর্যাদা পাচ্ছে তা নির্ণয় ক’রে যদি মনে হয় যে প্রফেশনালি ফটোগ্রাফি শিখলে তুমি তোমার দক্ষতাকে অনেক বেশি পরিশীলিত করতে পারবে তাহলে অবশ্যই এই কোর্স তোমার জন্যই ।
ফটোগ্রাফির দুটি ফ্রী অনলাইন কোর্স দেওয়া হলো যেগুলি করে আপনি বুঝে নিতে পারবেন সত্যি ফটোগ্রাফির বিষয়ে আপনার আগ্রহ কতখানি –
পলিটেকনিক বা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে হলে যে বিষয়গুলি জেনে রাখা দরকার
পলিটেকনিক দিয়ে কোন কোন শাখায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া যায় – প্রথম পর্ব
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এ কোন কোন শাখায় পড়া যায় – দ্বিতীয় পর্ব